|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
২১ আগস্টের ‘দুর্ঘটনার’ মধ্য দিয়ে সামগ্রিক রাজনীতিকে দুর্ঘটনায় ফেলা হয়েছে বলে জানালেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বললেন, “ওই সন্ত্রাসী হামলাই এক-এগারো অর্থাৎ, সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পথ তৈরি করেছিল। আর এক-এগারোর মাধ্যমে ফায়দা হয়েছে বিএনপির অতি মুখোমুখি প্রতিপক্ষের।
শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এক স্মরণ আলোচনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানের স্মরণে দলের ঢাকা জেলা কমিটি এ আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ২০০’র ওপরে আসন নিয়ে তখন বিএনপি ক্ষমতাসীন। একটা স্থিতিশীল ক্ষমতাসীন সরকার কখনোই চাইবে না, সেই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে। ২১শে আগস্টের ঘটনাটা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করা, উসকানি দেওয়া, অর্থাৎ সরকারকে বিব্রত করে দেশে-বিদেশে সকল ক্ষেত্রে। আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল বিএনপির নেতৃত্বের জন্য কবর রচনা।
গয়েশ্বর প্রশ্ন তোলে বলেন, ‘এক-এগারোয় কে ভিকটিম হয়েছে? বিএনপি হইছে,খালেদা জিয়া হইছে। এক-এগারোয় লাভবান হয়েছে কে? হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ। তাহলে ডাউট অব দ্য বেনিফিশিয়ারি যদি বলা হয়, এক-এগারোর মাধ্যমে বেনিফিট হয়েছে বিএনপির অতি মুখোমুখি প্রতিপক্ষের।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটা যদি প্রতিষ্ঠিত হতো, এটা যদি জনগণ বিশ্বাস করত যে, এটা সরকার করেছে অথবা খালেদা জিয়া বা তারেক রহমান করেছে, তাহলে সেদিন সরকার থাকার কথা না। তখন একটা পাতাও নড়েনি, একটা আওয়াজ হয় নাই। এটা জনগণের বোঝা হয়ে গেছে যে, এই অপকর্ম একটা গণতান্ত্রিক, একটা দায়িত্বশীল সরকার কোনো মতেই করতে পারে না। এটাই আমি ভারতীয় টেলিভিশনে সেদিন বলছিলাম।’
সেদিনকার সরকারের ভুল-ভ্রান্তির কথা স্বীকার করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, মনের ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সরকারে থাকতে ভুল-ভ্রান্তি আমাদের কিছু ছিল। যার খেসারত আজকে জনগণ দিচ্ছে, আজকে আমরা দিচ্ছি, খেসারত তারেক রহমান দিচ্ছে, খেসারত খালেদা জিয়া দিচ্ছে। তবে যারা অপকর্ম করেছে তারা খেসারত দেয়নি। তারা কিন্তু আমাদের আশপাশে আরও বলীয়ান হওয়ার চেষ্টা করছে। ২১ আগস্টের হামলা বাংলাদেশের ভাবনা থেকে হয়নি, এই ভাবনার পরিকল্পনা অন্য কোথাও বাস করে।’
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, প্রয়াত আবদুল মান্নানের মেয়ে মেহনাজ মান্নান প্রমুখ।