সারাবেলা ডেস্কঃ
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘ ২ বছর কারাবন্দী থাকার পর গত ২৫ মার্চ ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারের জিম্মায় ছয় মাসের জন্য কারামুক্ত হন খালেদা জিয়া। দুটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় তার মুক্তির আদেশে। এই সময়ে ঢাকায় তার নিজের বাসায় থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। তাই মুক্তির পর তাকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন।
কিন্তু জেলে থাকা ওই ২৫ মাসে দলীয় প্রধানকে মুক্ত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে তার দল। না আন্দোলন, না আইনি লড়াই- কোনোটাতেই সফলতার মুখ দেখেনি দলের নেতারা। শেষমেশ পরিবারের মধ্যস্থতায় ও সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন খালেদা জিয়া। একদিকে আন্দোলনে ব্যর্থতা, অন্যদিকে আইনি লড়াইয়ে কোনো সুরাহা করতে না পারা- সব মিলে দলের ভূমিকায় হতাশ বিএনপি চেয়ারপার্সন। এ নিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের কাছে তার অসন্তোষও প্রকাশ করেছেন তিনি।
ফিরোজায় ফিরে খালেদা জিয়া যে কয় ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের একাধিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আলাপে খালেদা জিয়া তার মুক্তির ব্যাপারে দলের ভূমিকা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তার মুক্তির জন্য যে ধরনের জোরদার আন্দোলনের প্রয়োজন ছিল, দল তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। অতীতে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজনৈতিক নানা দাবি আদায় হয়েছে। কিন্তু দলীয় প্রধানকে মুক্ত করার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের যে ধরনের একাগ্রতা দরকার ছিল, তার অভাব ছিল বলেই তাদের কোনো হাঁকডাক কাজে আসেনি। এমনকি আইনি পথেও কোনো সুরাহা করতে পারেননি তারা। দলের নেতাদের এই ব্যর্থতার কারণে তাকে দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকতে হয়েছে।
দলীয় প্রধানের কারাবাস এত দীর্ঘ হবে, আগে থেকে তা আঁচ করতে পারেননি দলের শীর্ষ নেতারা- এমন কথা শোনা গেছে তাদের মুখে। তারা দাবি করেন, চেষ্টার তাদের কোনো ত্রুটি ছিল না। শুরু থেকে তারা আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। এতে এতিমখানা ট্রাস্টের দুর্নীতি মামলায় জামিন পান খালেদা জিয়া। কিন্তু অন্য মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোয় মুক্তি আটকে যায় তার। উল্লেখ্য, জিয়া এতিমখানা (অরফানেজ) ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। রায়ের পর ওই দিনই আদালত থেকে নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারে নেওয়া হয় সত্তরোর্ধ্ব খালেদা জিয়াকে। সেই থেকে কারান্তরীণ ছিলেন তিনি।