সংক্রমণ বাড়বে সাতদিন ঢাকায় শিগগিরই ‘হটস্পট’ লকডাউন

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

আগামী এক সপ্তাহে সারাদেশে করোনা সংক্রমণের বিস্তৃতি বাড়বে। গেল কয়েক দিনে এই ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু ও সংক্রমিতের হার বিবেচনায় এমন ধারণা দিয়েছেন করোনাদুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে গেল চব্বিশ ঘন্টায় এই ভাইরাস সংক্রমণে নতুন করে মারা গেছে ৩৫ জন। গেল ১৮ই মার্চ প্রথম মৃত্যুর পর থেকে এ পর্যন্ত মারা যাওয়ার মোট সংখ্যা এখন ৮৪৬। এছাড়া একইসময়ে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৬৩৫ জন। এনিয়ে দেশে এ পর্যন্ত আক্রান্তের মোট সংখ্যা এখন ৬৩ হাজার ২৬ জন।

সংক্রমিতের হার বিবেচনায় এখন বিশ্বের প্রথম ২০ দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

দেশের করোনাভাইরাস সংক্রমনের এমন পরিস্থিতিতে নতুন পদ্ধতিতে লকডাউন আরোপে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। সংশ্লিস্টরা বলছেন, সংক্রমণের আধিক্য বিবেচনায় রেড, ইয়ালো এবং গ্রিন তিন ক্যাটাগরিতে এলাকাভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করা হবে।

নতুন এই পদ্ধতিতে ইতোমধ্যেই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার পুরো কক্সবাজার পৌরসভাকে রেড জোন হিসেবে লকডাউন করা হয়েছে। আপাতত ২০শে জুন পর্যন্ত গোটা পৌর এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কোভিড-১৯ বিষয়ক মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান খান জানিয়েছেন, দুয়েকদিনের মধ্যে ঢাকার কিছু এলাকায় ‘পাইলট ভিত্তিতে’ লকডাউন শুরু করা হবে।

শনিবার দুপুরে তিনি বলেন, “হটস্পট বা ক্লাস্টার এরিয়া বিবেচনায় শুরুতে আমরা পাড়া, মহল্লা বা ওয়ার্ডভিত্তিক লকডাউন করবো। শুরুতে সীমিত পরিসরে ঢাকার মধ্যেই লকডাউন করা হবে। কারণ ঢাকাতেই কোভিড-১৯ এর রোগী বেশি। পরে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে অন্যান্য জেলা শহরেও লকডাউনের পথে হাঁটব।”

মহামারীর বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় ‘সাধারণ ছুটি’ শেষে ৩১শে মে থেকে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর হারের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন হিসাবে দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

হাবিবুর রহমান খান বলেন, “আমরা আইসিটি বিভাগের সহায়তায় কোন কোন এলাকা লকডাউন করবো, তার ম্যাপিং শুরু করেছি। এতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যোগ দিয়েছেন। পুরো কাজটি শেষ হয়নি। শেষ হলেই আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে আমরা কাজ শুরু করছি।”

করোনাভাইরাসে সংক্রমন বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন এলাকা লাল বা হলুদ জোনে ভাগ করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বড় এলাকা না ধরে ক্ষুদ্র পরিসরে লকডাউন করতে চায়।

এ প্রসঙ্গে হাবিবুর বলেন, “যেসব এলাকায় রোগী বেশি সেসব এলাকাকে ‘রেড জোন’ বলে ঘোষণা দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওই এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করে দেওয়া হবে। লকডাউন চলাকালে কাউকে ঘরের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। একই পদ্ধতিতে ইয়েলো ও গ্রিন জোন চিহ্নিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে ইয়েলো জোনে কেউ খুব জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে চাইলে সেই সুযোগ দেওয়া হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন