রোজায় মসজিদে নামাজ পড়তে দিতে বিবৃতি আহমদ শফীর

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

রোজায় জুমা. ওয়াক্তের নামাজ ও তারাবীহ নামাজের জন্য মসজিদ খোলা রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি। মঙ্গলবার আলহাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আহমদ শফিসহ বেশ কয়েকজন মাওলানা মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বেশ কিছুদিন পরে হলেও সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে, মসজিদ খোলা রাখা হলেও প্রতি ওয়াক্তের জামাতে পাঁচজনের বেশি অংশ নেওয়া যাবে না। আর এই পাঁচজন হবেন মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম। এ ছাড়া জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। বাইরের মুসল্লি মসজিদে গিয়ে জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।

তবে করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ শেখ বলেছেন, রোজায় তারাবির নামাজ মসজিদে না পড়ে বাড়িতেই আদায় করা যেতে পারে। ঈদুল ফিতরের নামাজের ক্ষেত্রেও তিনি একই কথা বলেছেন। সৌদি আরবের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও মক্কার মসজিদুল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববি বন্ধ করে দিয়েছে। আসছে রোজার মাসে বাড়িতে তারাবির নামাজ আদায়ের নির্দেশনা সংবলিত একটি ঘোষণাও দিয়েছে দেশটির মন্ত্রণালয়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশটির মসজিদগুলোয় জামাতে নামাজ আদায়ের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে সৌদি সরকার।

কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে স্নাতকোত্তর স্তরের সমমানের স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আলহাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া নামের সংস্থাটি গঠন করা হয়। সংগঠনটি শর্ত সাপেক্ষে মসজিদ খোলা রাখা কথা জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে, রমজানুল মোবারক আসন্ন। এই মাস রহমত ও নাজাতের মাস। করোনাসহ সব বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির জন্য এই মাসের সদ্ব্যবহার একান্ত জরুরি।

তাঁদের ১৪ দফা শর্তের মধ্যে রয়েছে:

মসজিদে কার্পেট, জায়নামাজ বা গালিচা না বিছানো, জুমার বয়ান, খুতবা, জামাত ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করা এবং নামাজের আগে-পরে মসজিদের ভেতরে বা সামনে জড়ো হওয়া যাবে না। পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের মুসল্লি এবং ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সী পর্যন্ত বালকদের মসজিদে না আসা, যাদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে এবং যারা আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন কিংবা যারা এসব মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছেন তাঁরা মসজিদে আসবেন না। যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত তারা এবং যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন তাঁরাও আসবেন না। এ ছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে মসজিদকে জীবাণুনাশক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং ওযুখানায় অবশ্যই সাবান ও পর্যাপ্ত টিস্যু রাখতে হবে। মুসল্লিদের দুজনের মাঝে অন্তত দুই ফুট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে দাঁড়ানো,বাসা থেকে অজু , হাত ও পা ভালোভাবে ধুয়ে মুছে মসজিদে যেতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান,পরস্পর হাত মেলানো ও আলিঙ্গন থেকে বিরত থাকা, সম্মিলিত ইফতারের আয়োজন না করা, মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকা, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের প্রশাসনের দায়িত্বরত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে প্রতি মসজিদে একটি করে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করতে হবে।

শাহ আহমদ শফি ছাড়াও বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আরও রয়েছেন, আলহাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়ার কো চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মুফতি মো. ওয়াক্কাস, মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর প্রমুখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন