রায়ে আমৃত্যু না লিখলে যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাবাস

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ব্যাখ্যা দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার পয়লা ডিসেম্বর আপিল বিভাগ এ সম্পর্কিত রায়সংশ্লিষ্ট ব্যাখ্যায় বলেন, প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন মানে হচ্ছে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। তবে আদালত চাইলে কোন অপরাধীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডও দিতে পারবেন।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, উচ্চআদালত ||

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ব্যাখ্যা দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার পয়লা ডিসেম্বর আপিল বিভাগ এ সম্পর্কিত রায়সংশ্লিষ্ট ব্যাখ্যায় বলেন, প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন মানে হচ্ছে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। তবে আদালত চাইলে কোন অপরাধীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডও দিতে পারবেন। অর্থাৎ কোন বিচারপতি বা বিচারক অপরাধীর সাজা হিসেবে আমৃত্যু কারাবাস শব্ধবন্ধ লিখলে সেই অপরাধীকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেন।

গত ২৪শে নভেম্বর এ সম্পর্কিত আপিল বিভাগের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের সিদ্ধান্ত জানাতে আজকের (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে গত ১১ই এপ্রিল এ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) শুনানিতে ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ হবে কি না সে বিষয়ে আইনি মতামত জানাতে আদালত চার সিনিয়র আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন।

২০০৩ সালের ১৫ই অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০শে অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল আবেদন করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ সাতদফা অভিমত দেন। এরপর আপিলের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়।

রিভিউ আবেদনকারীর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, যাবজ্জীবন সাজা হলে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ৩০ বছর কারাগারে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি রেয়াতি সুবিধা পাবেন।আমৃত্যু কারাদণ্ড হলে দণ্ডিত কোনো রেয়াত পাবেন না।

প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে হচ্ছে দণ্ডিত ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত পুরো সময়। তবে ৪৫ ও ৫৩ ধারা ও দণ্ডবিধির ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫ (এ) এর সঙ্গে মিলিয়ে পড়া হয় তাহলে বুঝা যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে হচ্ছে ৩০ বছর। কিন্তু আদালত যদি স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়, অথবা ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দণ্ডিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫(এ) প্রযোজ্য হবে না।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন