বললেন তথ্যমন্ত্রী
|| বার্তা সারাবেলা ||
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কারাবন্দী লেখক অ্যাক্টিভিস্ট মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিদেশিদের বিবৃতি দেয়াকে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়কে দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার ২য় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশি কূটনীতিকদের এসম্পর্কিত বিবৃতি সম্পর্কে জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘জনাব মুশতাকের মৃত্যুতে আমিও ব্যথিত। এবং এই মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা জানতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পাবার পরই বোঝা যাবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন। কিন্তু এনিয়ে কিছু বিদেশি রাষ্ট্রদূত বিবৃতি দিলেন, তাতে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘিত হয়েছে। তাদের অনেক দেশেই অনেক মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটে, তাদের দেশেও এ আইন আছে, গ্রেফতার ও শাস্তি হয়।’
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এখন স্বনির্ভর রাষ্ট্র, আমরা নিজের টাকায় পদ্মাসেতু করেছি, কারো মুখাপেক্ষি নই জানিয়ে তড়িঘড়ি করে এধরণের বক্তব্য দেয়ার পুরনো অভ্যাস পরিহার করার আহবান জানান তথ্যমন্ত্রী।
জাতিসংঘের কোনো বিবৃতি আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিবৃতিটি জাতিসংঘ থেকে দেয়া নয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অনেকজন কমিশনারের একজন একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি একসময় চিলির প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সেসময়ও অনেক মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে।
মন্ত্রী কমিশনের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যখন চরমভাবে মানবাধিকার লংঘিত হয়, বছরের পর বছর বাচ্চাদেরকে বাবা-মা থেকে আলাদা করে রাখা হয়, ফ্রান্সে যখন গুলি করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা হয়, গুয়ান্তামো বে’তে নির্যাতন হয়, তখন কি তারা বিবৃতি দিয়েছিলেন! সুতরাং এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এতে কারো নাক গলানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা। এতে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘিত হয়।’
‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করোনা টিকা নেয়া প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব নিজেও টিকার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন, এই টিকা কাজ করবেনা বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন কিন্তু তিনিই এখন টিকা নিয়েছেন।’
জলঘোলা করে পানি খাওয়ার মতো অহেতুক সরকারের সমালোচনা করে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে তাদের যাতে না পড়তে হয় সেজন্য তাদের সমালোচনার সময় সতর্কতা অবলম্বনের আহবান জানান তথ্যমন্ত্রী।
এর আগে দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার ২য় বর্ষপূর্তিতে প্রধান অতিথি হিসেবে কেক কাটার পর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় পত্রিকাটির সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পত্রিকাটি স্বল্প সময়ের মধ্যেই সমাজের দর্পণ হিসেবে ভূমিকা রাখার চেষ্টায় ব্রতী হয়েছে। রাষ্ট্রের চতূর্থ স্তম্ভ হিসেবে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে এবং দৈনিক সময়ের আলো দেশ ও মানুষকে আশার আলো দেখাবে বলে আশা করেন মন্ত্রী।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে পত্রিকাটির অব্যাহত অগ্রযাত্রা কামনা করেন। কেক কাটার সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফও অংশ নেন। বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট শামসুল আলামিন কাজল।
সময়ের আলো’র মাতৃপ্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম এম এনামুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক রমজানুল হক, পরিচালক মাহফুজা মাইশা হক এসময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
সংবাদসূত্র: তথ্যবিবরণী