|| অর্থবাজার প্রতিবেদন, ঢাকা ||
করোনাভাইরাসের আর্থিক অভিঘাতের শিকার দেশের সবাই। তবে গেল দুইমাসে ক্ষতিগ্রস্ত এক কোটি ৩৮ লাখ ব্যবসায়ীর ঋণের মোট সুদের দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে সরকার। বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ীদের নেওয়া এসব ঋণের মোট সুদের পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা।
রোবাবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ২০২০ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ও পরিসংখ্যান প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার ফলে আনুমানিক এককোটি ৩৮ লাখ ঋণগ্রহীতা সরাসরি উপকৃত হবেন। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গেল দুইমাস তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ ছিল। সরকার প্রধান বলেন, “সেই কারণেই তাদেরকে এই সুযোগটা আমরা দিচ্ছি, যাতে তারা তাদের ব্যবসা বাণিজ্য বা কার্যক্রমগুলো সব চালাতে পারেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, দুই মাসে স্থগিত সুদের পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্য থেকে ২ হাজার কোটি টাকা সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ভর্তুকি হিসেবে দেবে, যার ফলে ঋণগ্রহীতাদের আনুপাতিক হারে নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ আর পরিশোধ করতে হবে না।
তিনি বলেন, “তাদেরকে এইটুকু আমরা মুক্ত করে দিচ্ছি।”
শেখ হাসিনা জানান, সুদের অবশিষ্ট অর্থ ব্যবসায়ীরা যাতে ১২ মাসের কিস্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করতে পারেন, সরকার সেই উদ্যোগ নেবে। অর্থাৎ যেটা প্রতি মাসে দিতে হতো সেটা এই দুই মাসে যেহেতু দিতে পারেনি এটাকে আমরা ১২ মাসের একটা সময় দিয়ে দিচ্ছি। এই ১২ মাসে ধীরে ধীরে তারা বাকিটা শোধ করতে পারবেন।”
সর্বস্তরের মানুষের জন্যই বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি জানি না পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ এভাবে দিয়েছে কিনা। কিন্তু আমরা সেভাবে এই সুযোগটা দিচ্ছি।”
দেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশই প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এত প্রণোদনা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ দিয়েছে কিনা জানি না।”
সরকারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের আর্থিক অভিঘাত মোকাবিলায় এটা সরকারের ১৯তম প্রণোদনা প্যাকেজ। এর মধ্য দিয়ে প্রণোদনা তহবিলের মোট আকার দাঁড়ালো এক লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলারে। যা দেশের মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।