জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যকরে সঠিক সমন্বয় চাইলেন কাদের

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

করোনাভাইরাসের সংক্রমণমাত্রা বিবেচনায় লাল, হলুদ ও সবুজ এলাকা চিহ্নিত করে লকডাউনের কার্যকারিতা নির্ভর করছে সঠিক সমন্বয়ের ওপর।

বুধবার নিজের সরকারি বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের এমন অভিমত জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং বিস্তার এখন উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে গেছে। প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, দক্ষিণ এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে উচ্চমাত্রায় সংক্রমণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, করেছে সতর্ক। চীনে নতুন করে উচ্চ সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, “এই বাস্তবতায় নিজের বিবেক নিজের পাহারাদার না হলে এই উদাসীনতা থেকে আমাদের কে মুক্ত করবে? এখনও ভিড়, জটলা। বাজারে, কর্মস্থলে অনেকে মাস্ক পড়েন না। সংক্রমণ গোপন করে চলাফেরা করছেন। এ শৈথল্য, এই অবহেলা সর্বগ্রাসী করোনার কাছে নিজেকে এবং আমাদের আশপাশের সবাইকে নিয়ে আত্মসমর্পণের শামিল।”।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকার নতুন করে সংক্রমিত এলাকা ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে রেড, গ্রিন, ইয়োলো জোনে ভাগ করতে যাচ্ছে। এর সঠিক সমন্বয়ের উপর নির্ভর করবে কার্যকর ফল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, ডিএমপিসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর ও কর্তৃপক্ষের মাঝে সুসমন্বয় গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, “আমাদের আর অবহেলার সময় নেই। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংক্রমণ রোধে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। রাজধানী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত গড়ে তুলতে হবে কার্যকর সমন্বয় ও সুরক্ষার দুর্ভেদ্য প্রাচীর।”

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সংক্রমণ বাড়তে থাকার প্রেক্ষিতে সরকারের নেওয়া নতুন পথপদ্ধতি দ্রুত কার্যকর ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংক্রমণ রোধে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

কাদের বলেন, “সরকার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। …ব্যস্টিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক চালকের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা এবং চিকিৎসা নেটওয়ার্ক সচল ও সম্প্রসারণে সরকারের নিরলস প্রয়াস দৃশ্যমান। শুধু প্রয়োজন সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা। এই দুর্দিনে আমরা সকলের সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু কিছু কিছু মতলবী মহল আবহেলা করছে, অসহযোগিতা করছে এবং অন্ধকারের পথ বেছে নিচ্ছে।”

বিএনপি সংকটের শুরু থেকে ভুল ধরিয়ে দেয়ার নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা আর নেতিবাচক বক্তব্যের চর্বিত-চর্বন করে যাচ্ছে জানিয়ে কাদের বলেন, দেশ জাতি তথা অসহায় মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে মিথ্যাচার আর গুজব ছড়ানোকেই পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে মেনে নিয়েছে বিএনপি। তাদের এই মিথ্যাচার ফ্রন্ট লাইনের কর্মরত যোদ্ধাদের মনোবল নষ্ট করার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় অনিয়মকারীদের কঠোরভাবে দমনের জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকার লকডাউন তথা জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যকর করার পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জাম বৃদ্ধি, টেস্টিং সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। নমুনা পরীক্ষা নিয়ে একটি অসাধু চক্র সক্রিয় হয়েছে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শুরুতেই এ সকল অপপ্রয়াস কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানাচ্ছি। এ ধরনের অসাধু চক্ররা আজকে দেশে জনগণের মাঝে এবং করোনায় সংক্রমিত মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আপনারা জানেন দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। অনিয়মকারী যে দলীয় পরিচয়েরই হোক না কেন, শেখ হাসিনার কাছে কোনো প্রশ্রয় নেই। ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে যেমন কঠোরভাবে শাস্তি দেয়া হয়েছে তেমনিভাবে চিকিৎসা সরঞ্জামে অনিয়ম হলেও সরকার শূন্য সহিষ্ণুতা বজায় রাখবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন