|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে ‘সাধারন ছুটি’ বহাল থাকার মধ্যেই ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বেশ কিছু এলাকায় খুলেছে পোশাক কারখানা। সরকার ঘোষিত ‘সাধারন ছুটি’তে যানবাহন না চললেও চাকরি বাঁচাতে শ্রমিকরা নানাভাবে ঢুকছে ঢাকায়। শ্রমিকদের এই স্রোত ঠেকাতে এবার কারখানার পরিচয়পত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে সরকার।
তবে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে কারখানা খোলার বিরোধিত করে আসা পোশাক শ্রমিক নেতারা বলছেন, পরিচয়পত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা দিয়ে বস্তুত শ্রমিকদের ঢাকায় ঢোকার বৈধতা দেওয়া হচ্ছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৬শে মার্চ থেকে বলবৎ ‘সাধারণ ছুটি’র মাধ্যমে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সারাদেশ। এক মাস পেরোনোর পর গত সপ্তাহে পোশাক কারখানাগুলো খুললে গণপরিবহন বন্ধের মধ্যেও চাকরি বাঁচাতে শ্রমিকরা রাজধানী ও নরায়ণগঞ্জ, গাজীপুরের দিকে আসতে থাকে।
এদিকে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে কারখানা চালু করার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তার কোন চিহ্নমাত্রা দেখা যাচ্ছে না। শ্রমিকদেরকে এভাবে কাজে যোগ দেওয়ানোকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তারের বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার শ্রমিকদের ঢাকায় ঢুকতে নিজ নিজ কারখানার পরিচয়পত্র প্রদর্শনের নির্দেশনা দিয়েছেন কলকারখানা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়। অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোনো শ্রমিকের কারখানার কাজের জন্য ঢাকায় আসার প্রয়োজন হলে তাকে ফ্যাক্টরি আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষকে তা দেখাতে হবে। অন্যথায় ঢাকার প্রবেশপথে, ঘাট ও স্থানসমূহে তাদেরকে আটকে দেওয়া হবে। এবং রাজধানীতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে না।”
ঢাকার বাইরে অথবা দূরদুরান্ত থেকে পোশাক শ্রমিকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকায় আসায় নিরুৎসাহিত করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
এই নির্দেশনাকে সরকারের দ্বিমুখী আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আকতার। তিনি বলেন, “যখন কারখানা খোলা হল, তখন বলা হয়েছিল আশপাশের শ্রমিকরা কাজ করবে, দূরের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে না। এখন এই নির্দেশনার মাধ্যমে দূরের শ্রমিকদের আসার সুযোগটি করে দেওয়া হয়েছে।”