করোনা সঙ্কটে খাদ্যশষ্যের উৎপাদন বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-দিল্লী

|| সারাবেলা ডেস্ক/বাসস ||

করোনাদুর্যোগে সম্ভাব্য খাদ্য সঙ্কট মোকাবেলায় খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়াতে ঢাকার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চায় দিল্লি। বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়ে এই আগ্রহের কথা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এসময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই আগ্রহে সায় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একসঙ্গে কাজ করবার অঙ্গীকার জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (বুধবার) বিকেল ৫ টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে তাঁকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে বাংলা নববর্ষ এবং পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং জনগণকে মাহে রমজানের মোবারকবাদ জানান।

১২ মিনিটের টেলিফোন কথপোকথনে উভয় নেতা করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলায় দুই দেশের সরকারের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে নেওয়া পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করেন। প্রয়োজনে উৎপাদন বাড়াতে উভয়ে একযোগে কাজ করবে বলেন প্রেস সচিব।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার আশংকা এই পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হতে পারে। ‘কাজেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই অঞ্চলের সকল দেশের একযোগে কাজ করতে হবে,’বলেন প্রধানমন্ত্রী।

উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীই করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় দুই দেশের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং এ বিষয়ে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তাঁদের অঙ্গীকারও পুণর্ব্যক্ত করেন।

উভয় প্রধানমন্ত্রীই করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে গত মাসে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে গৃহীত সার্ক ভুক্ত দেশগুলোর উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সম্মত হন।

শেখ হাসিনা এ সময় কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ওষুধ এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোয় নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাও জানান, বলেন প্রেস সচিব।

এদিকে এই ফোনালাপ নিয়ে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের এক বার্তায় বলা হয়েছে, উভয় নেতাই সড়ক, রেল, অভ্যন্তরীণ নৌপথ ও বিমান যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। মোদী কোভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে এবং স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মহামারীর প্রভাব প্রশমনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে ভারতের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

নয়াদিল্লী থেকে বাসস প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার কয়েক মিনিট পর মোদি এক টুইট বার্তায় বলেন, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোভিড-১৯ নিয়ে এবং এই মহামারির বিপক্ষে ভারত-বাংলাদেশ কিভাবে লড়াই করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

টুইট বার্তায় মোদি বলেন, ‘তাঁকে ও বাংলাদেশের জনগনকে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা কথা বলেছি। আমরা কোভিড ১৯ পরিস্থিতি এবং ভারত-বাংলাদশ এ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবেই থাকবে।’

এদিকে নয়াদিল্লীতে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতা কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং নিজ নিজ দেশে এর প্রভাব নিরসনে যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে একে অপরকে জানান।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়. উভয় নেতা সার্ক ভুক্ত দেশসমুহের নেতাদের মধ্যে ১৫ই মার্চ বিশেষ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে সন্তোষ জানান। এছাড়া সার্ক কোভিড ১৯ জরুরি তহবিলের জন্য দেড় বিলিয়ন ডলার দেওয়ায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন