ধবলধোলাইটা করেই ছাড়লো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০০৯ সালে করা ধবলধোলাইটা ছিল প্রশংসা আর বিদ্রুপে মেশানো। উইন্ডিজের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানের সেদিনের ওই সিরিজ জয় ছিল একইসঙ্গে প্রাপ্তি ও তৃপ্তিরও। সেই তুলনায় অনভিজ্ঞ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এবারের সিরিজটি ছিল বেশ সহজ। তবে করোনা পরবর্তী ক্রিকেটে ফেরার এই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর ফলটা বেশ আনন্দের।

|| খেলা সারাবেলা ||

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০০৯ সালে করা ধবলধোলাইটা ছিল প্রশংসা আর বিদ্রুপে মেশানো। উইন্ডিজের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানের সেদিনের ওই সিরিজ জয় ছিল একইসঙ্গে প্রাপ্তি ও তৃপ্তিরও। সেই তুলনায় অনভিজ্ঞ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এবারের সিরিজটি ছিল পানসে। তবে করোনা পরবর্তী ক্রিকেটে ফেরার এই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর ফলটা মিষ্টি।

কারণ ২০২৩ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা পাওয়ার এই ওয়ানডে সুপার লিগ আসরে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট তুলে নিয়েছে টাইগাররা। সঙ্গে যোগ হয়েছে সবার চেয়ে বেশি ১.৮৯ নেট রান রেট। উঠে গেছে পয়েন্ট টেবিলে দুইয়ে। ১২০ রানের এই জয়ে ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয়বার ধবলধোলাই করেছেন সাকিবরা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের ১৪তম ধবলধোলাই পূর্ণ করেছে। ঘরে তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দশ ওয়ানডে সিরিজের পাঁচটি।

মিরপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতে পরে ব্যাট করে যথাক্রমে ৬ ও ৭ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে তাই শুরুতে ব্যাট করা বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। শুরুতে লিটন দাস ও নাজমুল শান্ত ফিরে যাওয়ায় জোরালো হয় সেই শঙ্কা। তবে চার পাণ্ডব তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদুল্লহর ফিফটিতে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান তুলতে পারে স্বাগতিকরা।

জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৪.২ ওভারে তুলতে পারে ১৭৭ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ৩৬ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রোভম্যান পাওয়েল। এছাড়া এনকুরুমা বোনার ৩১ রানের ইনিংস খেলেন। রেমন রেইফারের ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান। আর কেউ ২০ রানের ঘরে নাম তুলতে পারেননি।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক তামিম ইকবাল খেলেন ৮০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস। ক্যারিয়ারের ৪৯তম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নেওয়ার পথে সাকিবের সঙ্গে তিনি তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৯৭ রান। তামিমের আউটের পরে মুশফিকের সঙ্গে আবার ৭৮ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান। ফিরে যাওয়ার আগে করেন ৮১ বলে ৫১ রানের ইনিংস। তুলে নেন ৪৮তম ওয়ানডে ফিফটি।

তামিম-সাকিবের ধীর ইনিংসের পরে দলের রান বাড়িয়ে নেওয়ার কাজটা করেন মিডল অর্ডারের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ। দু’জনের ব্যাট থেকেই আসে ৬৪ করে রানের ইনিংস। তবে দারুণ এই ইনিংস খেলার পথে মুশফিক মুখোমুখি হন ৫৫ বলের। চারটি চার ও দুটি ছক্কা তোলেন তিনি। অন্যদিকে অপরাজিত ইনিংস খেলতে মাহমুদুল্লাহ নেন ৪৩ বল। তার ইনিংস সাজানো ছিল তিন ছক্কা ও তিন চারে।

শেষ এই ওয়ানডে ম্যাচে দলে ফিরে সাইফউদ্দিন নেন ৫১ রানে ৩ উইকেট। এছাড়া মুস্তাফিজ ও মেহেদি মিরাজ দুটি করে উইকেট নেন। তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকার একটি করে উইকেট দখল করেন। মিরাজ তার করা ৬০ বলের মধ্যে ডট দেন ৪৬টি। আর তাসকিন ৫০ বল করে ৩৬টি ডট দেন। অন্যদিকে মুস্তাফিজের করা ৩৬ বলের ২৩টি থেকেই রান নিতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ইংল্যান্ডকে ছাড়িয়ে দুই নম্বরে বাংলাদেশ

এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা তিন ওয়ানডে জয়ের মধ্য দিয়ে ক্রিকেটের জনক খ্যাত ইংল্যান্ডকে ছাড়িয়ে দুই নম্বরে উঠে গেল বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ে এখন টাইগাররা।

৬ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে নাম্বার ওয়ানে অস্ট্রেলিয়া।  তিন ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বাংলাদেশ।  ৬ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইংল্যান্ড।  আর ৩ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে চারে বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ক্রিকেট দল।

তিন ম্যাচে মাত্র ৯ পয়েন্ট নিয়ে আটে পরে আছে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল।

২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে ভারতে। স্বাগতিক হিসেবে বিরাট কোহলিরা সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে। এছাড়া সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের সেরা ৮ দল সরাসরি বিশ্বকাপ খেলবে। সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে সেরা আটে যারা থাকতে পারবে না তাদের বাছাই পর্বে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ করে নিতে হবে।

সংবাদ সারাদিন