মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারাতে বসেছে বাদাম বিক্রেতা

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, মেহেরপুর ||

মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারাতে বসেছে মুক্তার আলী (৪৫) নামের এক বাদাম বিক্রেতা। মুক্তার আলী গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিন শাহের ছেলে এবং পেশায় একজন বাদাম ও ফুর্তি বিক্রেতা। মুক্তার আলীকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে সড়ক দূর্ঘটনার বিষয়টি যেনতেনভাবে মিমাংসার চেষ্টা করছে দুই গ্রামের কিছু লোকজন।

প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, গত ৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বামন্দি ও ছাতিয়ানের মধ্যবর্তী স্থানে করমদী গ্রামের মুক্তার আলী ভ্যান থেকে নেমে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ছিল। এ সময় ছাতিয়ান গ্রামের কাবের আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৫) বেপরোয়া গতিতে মটরসাইকেল দিয়ে মুক্তার আলীকে ধাক্কা দেয়। মুক্তার আলী মটরসাইকেলের ধাক্কায় রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় আল ফালাহ ক্লিনিকে নিয়ে যায়।

মুক্তার আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানিয়েছে, আমরা খবর পেয়ে ছুটে যায় বামন্দি আল ফালাহ ক্লিনিকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মহানগর ক্লিনিক এন্ড এল আর নিউরোলোজিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে অস্ত্রপাচারের পর গত সোমবার বাসায় নিয়ে এসেছি। এক সপ্তাহ পরে আবার রাজশাহী নিতে হবে। তার চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ৭০ হাজার টাকা ফুরিয়ে গেছে।


মুক্তার আলীর স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, দূর্ঘটনার পর থেকে তারা কোন খোঁজ খবর নেয়নি। পরে সোমবার আমরা গাংনী থানায় অভিযোগ করলে গতকাল মঙ্গলবার মিমাংসার জন্য আসে। দুই গ্রামের কিছু লোকজন বসে মাত্র ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে মিটাতে চাচ্ছে। আমরা গরীব মানুষ এত টাকা খরচ করে চিকিৎসা করার ক্ষমতা আমাদের নাই। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানাচ্ছি।

এদিকে মুক্তার আলীর ভাতিজা অভিযোগের বাদি আলমগীর হোসেন জানান, আমরা উভর পরিবারের লোকজন মিমাংসার চেষ্টা করছি।

এদিকে ওই গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, মুক্তার আলীর বাম পায়ের হাড়ের তিন জায়গায় ভেঙ্গে গেছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে অনেক টাকা খরচ হবে। তারপরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। আমাকে বাদ দিয়েই তারা মিমাংসার চেষ্টা করেছে। মুক্তার আলীর পরিবারকে ঠুকানো হচ্ছে বলে আমি মনে করি।

সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল ওহাব জানান, তারা উভয়ে একে অপরের আত্মীয়। উভয় পক্ষের লোক দিয়ে জুড়ি বোর্ডের মাধ্যমে মিমাংসা করা হয়েছে। মিমাংসার বিষয়টি একেবারেই অমানবিক হয়েছে। যেহেতু জুড়ি বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেক্ষেত্রে আমার কিছু করার থাকে না।

আরিফুল ও তার ভাই শরিফুল জানান, আমরা মঙ্গলবার উভয় পরিবারের লোকজন বসে ৩৩ হাজার টাকায় মিমাংসা করে নিয়েছি।

গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই।

উল্লেখ্য, আরিফুল ইসলামের লোকজন মুক্তার আলীর পরিবারের কাছে জানায় তারা খুব গরীব মানুষ। যে মটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দিয়েছে সেই মটরসাইকেলও তার না। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে হিরো এইচ এফ ১০০ সিসির লাল রংগের মটরসাইকেলটি তার নিজেরই এবং ছাতিয়ান বাজারে আরিফুলের ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের দোকান রয়েছে।

সংবাদ সারাদিন