মৃত মামুন জীবিত ফেরা, ৬ আসামীকে অব্যাহতি

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অপহরণ মামলা ও মৃত মামুন জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগকারী ৬ আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও মামলার তদন্তকারী পুলিশ ও সিআইডির ৩ কর্মকর্তাকে তদন্তের বিষয়ে পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে আদেশ দেয়া হবে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ ||

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অপহরণ মামলা ও মৃত মামুন জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগকারী ৬ আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও মামলার তদন্তকারী পুলিশ ও সিআইডির ৩ কর্মকর্তাকে তদন্তের বিষয়ে পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে আদেশ দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারহানা ফেরদৌস এর আদালতে এই আদেশ দেন। এসময় মামুন ও ভুক্তভোগী ৬ জন সহ পুলিশ ও সিআইডির ৩ কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা হলেন, ফতুল্লা থানার এস আই মিজানুর রহমান, সিআইডি’র উপপরির্দশক জিয়াউদ্দিন উজ্জল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।

মামুন ২০১৪ সালে নিখোঁজ হন। ২০১৬ সালের ৯ মে ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন তার বাবা আবুল কালাম।

আসামি করা হয় তাসলিমা আক্তার, তার বাবা রহমত উল্লাহ, ভাই রফিক মিয়া, খালাতো ভাই মো. সাগর, সোহেল মিয়া ও ছাত্তার মোল্লাকে।

প্রথমে তদন্ত করে ছয় জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে প্রতিবেদন দেন ফতুল্লা থানার এসআই মিজানুর রহমান।এতে তিনি এক চাক্ষুষ সাক্ষীর জবানবন্দিও জমা দেন। এতে দাবি করা হয়, ওই নারী নিজে দেখেছেন, আসামিরা মামুনকে খুন করে শীতলক্ষ্যায় মরদেহ ভাসিয়ে দিয়েছে।

ফতুল্লা থানা-পুলিশের পর মামলাটি তদন্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। তারাও খুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে মরদেহ খুঁজে না পাওয়ার কথা জানায় আদালতকে জানান। এর পর মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি। ২৩ মাস তদন্ত শেষে তারাও আদালতে অপহরণের প্রমাণ হাজির করে প্রতিবেদন দেয়। এর শুরু হয় বিচার।গত ৩০ সেপ্টেম্বর শুনানি চলাকালে মামুন নিজেই এক মাস আগে হাজির হন বিচারকের সামনে। সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, অপহরণ মামলা ও মৃত মামুন জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিভিন্ন  মেয়াদে কারাভোগকারী নারীসহ ৬ জনকে মামলা থেকে অব্যহতি দিয়েছেন আদালত।

ভুক্তভোগীদের পক্ষের আইনজীবী এমদাদ হোসেন সোহেল জানান, আদালত নারীসহ ৬ জনকে মামলা থেকে অব্যহতি দিয়েছেন। একই সাথে ভুয়া অপহরণ মামলার বাদী ও জবানবন্দি দেয়া ভুয়া সাক্ষী সহ পুলিশ সিআইডি তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত ব্যবস্থা নিয়েছেন।এতে করে বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ তা প্রমাণিত হয়েছে।  তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করায় তাদের শাস্তি ও কারাভোগকারী ৬ জনের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছি।

দেড় বছর কারাভোগকারী নারী পোশাক শ্রমিক তাসলিমা আক্তার জানান, ‘ ৬ বছর ধরে হয়রানি করেছে আমার পরিবারকে। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর রিমান্ডে এনে আত্যাচার করেছে পুলিশ । মামুনকে খুন না করে, অপহরণ না করে মিথ্যা মিথ্যা মামলায় সাজা খেটেছি। যারা এই মিথ্যা  মামলা করে হয়রানি করেছে তারেদ শাস্তি চাই।

নারায়ণগঞ্জের সরকারি কৌসুলি ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, মামলাটি মিথ্যা মামলা হওয়ায় আদালত মামলার পর্যালোচনা করে ভুক্তভোগীদের অব্যাহতি দিয়েছেন। যিনি ভুয়া মামলা দায়ের করছেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন আদালত ।

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন