ছাতক প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে মানুষের বসবাস

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে চিকৎিসা সেবায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ উপজেলায় ৩টি পশু উন্নয়ন কেন্দ্র থাকলেও

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ ||

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে চিকৎিসা সেবায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ উপজেলায় ৩টি পশু উন্নয়ন কেন্দ্র থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনটিই ডাক্তার বিহীন পড়ে আছে। এই সুবাদে হাতুড়ে পশু ডাক্তার সেজে পশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ভবন দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে কিছু অসাধু লোক।

দীর্ঘদিন ধরে প্রাণিসম্পদ অফিসের ৬টি পদ শূন্য ও ৩টি পশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ডাক্তার থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার লক্ষাধিক হাঁস মুরগী ও গবাদিপশু। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, হাঁস, মোরগ, কোয়েল, কবুতরসহ অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণীর মালিক ও ক্ষুদ্র খামারীরা।

এদিকে এ উপজেলায় ৩টি পশু উন্নয়ন কেন্দ্র থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনটিই ডাক্তার বিহীন পড়ে আছে। অভিযোগ উঠেছে সৈদেরগাঁও পশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ভবনে দীর্ঘদিন যাবৎ হূমায়ুন নামের এক হাতুড়ে পশু ডাক্তার স্ব-পরিবারে বসবাস করে আসছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল দুরে থাকার কারনে আবার অনেকেই চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে এই হাতুড়ে ডাক্তারের শরনাপন্ন হন। কিন্ত ভুল চিকিৎসায় ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন গবাদি পশুর মালিকেরা। সরকারী ভবনে স্ব-পরিবারে বসবাস করে কোন প্রশিক্ষন ছাড়াই ডাক্তার সেজে অবাদে চালিয়ে যাচ্ছেন ঔষধ বানিজ্য এবং হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা এই কথিত পশু ডাক্তার।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে জানা যায়,  হাসপাতালে ১১টি পদের মধ্যে ৬টি পদ-ই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভ্যাটেরিনারি সার্জন), উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (কৃত্তিম প্রজনন), ভেটেরিনারী কম্পাউন্ডার ও এফএএআইসহ ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি দিয়েই চলছে এই হাসপাতালের কার্যক্রম।

এ উপজেলায় তালিকাভুক্ত গরু, মোরগ ও হাঁসের খামার, গবাদিপশুর সংখ্যা বিষয়ে কোন তথ্যই জানা যায়নি। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বলছেন এর সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। জানা যায়, এ হাসপাতালে কৃত্তিম প্রজনন, ছাগলের ঠান্ডা কাশিসহ ভ্যাক্সিন দিতে এক সময় প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১২০ জন বিভিন্ন সেবা নিতেন। বর্তমানে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে খামারি ও গবাদি পশুর মালিকরা।

এছাড়াও উপজেলার ৩টি পশু উন্নয়ন কেন্দ্র ডাক্তার বিহীন থাকায় খামারিরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অভিযোগ উঠেছে। এলাকায় পর্যাপ্ত গবাদিপশু থাকার পরও সেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসকের অভাবে গবাদি পশুর মালিকেরা ছুটছেন হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে। আর তাদের গলাকাটা ফি’র শিকার হচ্ছেন সাধারন মানুষ। কর্তৃপক্ষের অসচেতনতা ও অবহেলায় আগ্রহ হারাতে বসেছেন গবাদি পশু পালনকারীরা।

এ ব্যাপারে সৈদেরগাঁও পশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানরত হুমায়ুন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়োগপ্রাপ্ত না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ময়মনসিংহ থেকে প্রশিক্ষন নিয়েছি। ছাতক উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জানেন আমি এই বাসায় রয়েছি। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন অফিসের সবাই জানেন। ছাতক উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম মিয়া জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলায় ৩টি পশু উন্নয়ন কেন্দ্র থাকলেও ডাক্তার নেই।  এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সাড়ে ৩ মাস হয় এখানে এসেছি। সৈদেরগাঁও পশু উন্নয়ন কেন্দ্রে যদি অবৈধ ভাবে কেউ থেকে থাকেন এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষটি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।

সংবাদ সারাদিন