কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

কথাসাহিত্যক রাবেয়া খাতুন আর নেই। স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশেষ এই মানুষটি শনিবার বিকাল ৫টায় রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে মারা যান। তার ছেলে ফরিদুর রেজা সাগরের প্রতিষ্ঠান চ্যানেল আইয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাবেয়া খাতুন ১৯৩৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর গ্রামে। ১৯৫২ সালের ২৩শে জুলাই চলচ্চিত্র পরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সঙ্গে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের চার সন্তান- ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী।

লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিল সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদ, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের বিচারক প্যানেল, শিশু একাডেমির কাউন্সিল সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন।

সাহিত্য জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ১৯৯৩ সালে একুশে পদক ও ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন।

রাবেয়া খাতুন রচিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেঘের পর মেঘ’ অবলম্বনে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র ‘মেঘের পরে মেঘ’ এবং ২০১১ সালে তার আরেকটি জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মধুমতি’ অবলম্বনে পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী একই শিরোনামে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র ‘মধুমতি’। এছাড়াও অভিনেত্রী মৌসুমী ২০০৩ সালে তার লেখা ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ অবলম্বনে একই শিরোনামে নির্মাণ করেন একটি চলচ্চিত্র।

লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা করেছেন। সাংবাদিকতাও করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার। জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডের বিচারক, শিশু একাডেমির কাউন্সিল মেম্বার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘নতুন কুড়ি’র বিচারক।

লেখালেখির জন্যে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। তার মধ্যে আছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার-১৯৭৩, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার -১৯৮৯, একুশে পদক-১৯৯৩,বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ -১৯৯৪, নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক-১৯৯৫,জসিমউদ্দিন পুরস্কার-১৯৯৬, শেরে বাংলা স্বর্ণপদক-১৯৯৬, শাপলা দোয়েল পুরস্কার-১৯৯৬, টেনাশিনাস পুরস্কার -১৯৯৭, ঋষিজ সাহিত্য পদক-১৯৯৮, অতীশ দীপঙ্কর পুরস্কার-১৯৯৮, লায়লা সামাদ পুরস্কার -১৯৯৯, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৯৯৯, মিলেনিয়াম এ্যাওয়ার্ড -২০০০, টেলিভিশন রিপোটার্স এ্যাওয়ার্ড -২০০১, বাংলাদেশ কালচারাল রিপোটার্স এ্যাওয়ার্ড -২০০২, শেলটেক পদক- ২০০২ এবং মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার-২০০৫ ইত্যাদি।

তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন।

সংবাদ সারাদিন