ওমানে নির্যাতনের শিকার বশির আহমেদকে সহায়তা দিলো ব্র্যাক

বিদেশ যাওয়ার পর সবকিছুতে তাঁর প্রতিকুল অবস্থা বিরাজ করে। কোন রকম আধা বেলা বা এক বেলা খেয়ে কাজ করেন। তিনি কাজ করার পরও নিয়মিত বেতন পেতেন না। নিজের চলতেও অনেক কষ্ট হতো তার। দেশে থাকা পরিবারের সদস্য জন্য তিনি কোন টাকা পাঠাতে পারতেন না।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) ||

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের বশির আহমেদ ২০১৭ সালে বিশাল এক স্বপ্ন নিয়ে জীবিকার তাগিদে পাড়ি দেন ওমানে। স্বপ্ন ছিল-‘পরিবারের দুর্দশা দূর করবেন। সমাজের অন্য সব মানুষের মতো দুই বেলা দুই মুঠো ভাত ভালোভাবে খেতে পারবেন’। সব কিছু ঠিক করে তিনি বৈধভাবে বিদেশ যান। পড়ালেখা না থাকা ও দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশে যে কাজ দেওয়ার কথা ছিল সেই কাজ তিনি পাননি।

বিদেশ যাওয়ার পর সবকিছুতে তাঁর প্রতিকুল অবস্থা বিরাজ করে। কোন রকম আধা বেলা বা এক বেলা খেয়ে কাজ করেন। তিনি কাজ করার পরও নিয়মিত বেতন পেতেন না। নিজের চলতেও অনেক কষ্ট হতো তার। দেশে থাকা পরিবারের সদস্য জন্য তিনি কোন টাকা পাঠাতে পারতেন না। পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় আকামা করতে না পারায় কিছু দিন যাওয়ার পর তিনি ওই দেশে অবৈধ হয়ে যান। অবৈধ হয়ে যাওয়ায় মুক্তভাবে চলাফেরাও করতে পারতেন না তিনি।

কোন একদিন ওই দেশের পুলিশের হাতে ধরা পড়ে দীর্ঘ আট মাস জেলে ছিলেন বশির। জেলশেষে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয় ওমান সরকার। ওমানের জেলে থাকা অবস্থায় তিনি নানা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হন। সেই অসুস্থতায় এখন আর কোন ভারী কাজ করতে পারেন না তিনি।

বর্তমানে স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে খুবই অসহায়ভাবে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। এমন খবর পেয়ে এনজিও সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম অনুপ্রেরণা-২ প্রকল্পের ফিল্ড অর্গানাইজার আলা উদ্দিন অন্য কর্মকর্তারা বশিরের বাড়িতে যান। রয়েল ড্যানিস দূতাবাসের অর্থায়নে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বশিরকে বাছুরসহ একটি গাভী কিনে দেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি মাহবুব হোসেন মজুমদারের উপস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী বশির আহমেদকে এই সহায়তা দেয়া হয়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম অনুপ্রেরণা-২ প্রকল্পের হেড অফিসের ইকোনমিক রিএন্টিগ্রেশন ম্যানেজার ওয়ান নাই, কুমিল্লা জেলা কো-অর্ডিনেটর আবদুর রহিম, অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন মজুমদার, প্রকল্পের ফিল্ড অর্গানাইজার মো. আলা উদ্দিন, স্থানীয় মাস্টার কাউসার আহমেদসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম অনুপ্রেরণা-২ প্রকল্পের ফিল্ড অর্গানাইজার মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে অনেকেই ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম অনুপ্রেরণা’র অর্থায়নে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়া অভিবাসন সংক্রান্ত যে কোন তথ্য জানতে দেশ ও বিদেশ থেকে ব্র্যাকের টোল ফ্রি ০৯৬১০১০২০৩০ নাম্বারে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি।

সংবাদ সারাদিন