|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ ||
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক। এই কৃষকের আছে অভাব, নেই বলদ। তাই বাধ্য হয়ে বলদের কাজ করে দিচ্ছে স্ত্রী সন্তান। স্ত্রী-সন্তানকে দিয়েই মই টানিয়ে তৈরি করছেন কৃষি জমি।
কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ৩৫ শতাংশ জমিন ট্রাক্টরে হালের কাজ করছি। কিন্তু টাকার অভাবে কয়দিন ধরে ক্ষেতে মই দিতে পারছি না। অনেক জায়গায় টাকা পয়সা ধার চেয়েছি। কেউ দেয়নি। শেষে কোনো উপায় না পেয়ে বউ ছেলেকে নিয়ে নেমেছি জমিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু বকরের বড় ছেলেও কৃষিকাজ করেন। কিন্তু নিজের পরিবারের ভরণপোষণের পর বাবাকে সাহায্য করার মতো আর্থিক অবস্থা নেই তার।
মেজো ছেলে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। এক মেয়ে বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে। ছোট ছেলে মাহাদী হাসান সুমন দশম শ্রেণির ছাত্র।
আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ‘কোনো উপায় না দেখে স্বামীর কাজে সহযোগিতা করছি।
এই কাজ করায় কোনো লজ্জা বা কষ্ট নেই তার। কারো কাছে টাকা ধার চেয়ে পাননি। আবার পেলেও সময়মতো পরিশোধ করতে না পারলে অনেক কথা শুনতে হয়। তারচেয়ে এই ভালো মনে করেন তিনি।
ছোট ছেলে সুমন জানান, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ আর বাবার বয়স হয়েছে অনেক। তাই মায়ের সঙ্গে নেমে পড়েছেন জমি চাষে।
ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার জানান, অভাবের তাড়নায় স্ত্রী-সন্তানকে দিয়ে মই দেয়াটা খুবই দুঃখজনক। কৃষি অফিস থেকে তিনি ওই পরিবারকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।