রাষ্ট্র ও মানুষকে কী দিচ্ছে আর কী নিচ্ছে নভেল করোনা

|| শমশের আলী ||

কোভিড-১৯ বা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণকে চলতি শতাব্দীর একটি বিশ্ব-মহামারী বা বৈশ্বিক দুর্যোগ, যাই বলিনা কেন, বিশ্বব্যাপি এই ভাইরাসের বিভিষিকাময় বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে, সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব বেড়েই যাচ্ছে। এককথায় আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে পড়েছি। মানবিক এই বিপর্যয়ের আমাদেরকে শুধু বিপর্যস্তই করছে না পাশাপাশি সামনে নিয়ে আসছে নতুন এক বিশ্বব্যবস্থা।

নভেল করোনার নেতিবাচক প্রভাব

গত ৬ই জুন ২০২০ তারিখ সরকারী হিসাব অনুসারে দেশে নভেল করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৬৩ হাজার ২৬ জন এবং মারা গেছে ৮৪৬ জন। তবে সংক্রমনের গতি থেমে নেই। আক্রান্তদের শারিরিক-মানসিক কষ্টসহ চিকিৎসাসেবার অসহায়ত্ব, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক অবজ্ঞা ও অবহেলায় পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে যারপর নাই জটিল।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দা অর্থাৎ বেকারত্ব বৃদ্ধি, ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা, প্রবাসী শ্রমিকদের কাজ হারানো দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে যারা, দিনমজুর, অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত মানুষ, ক্ষুদ্রব্যবসায়ী, ক্ষুদ্রকৃষক, খামারী, তারাই এখন সবচেয়ে বিপর্যস্ত।

এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ভঙ্গুর অবস্থা স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা ব্যবস্থার; যা দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দায়িত্বেঅবহেলা, অস্বচ্ছতাসহ চিকিৎসা বাণিজ্যের কুফল বা বহি:প্রকাশ।

কৃষক ও খামারীদের উৎপাদিত ফসল ও পণ্যবিপণন, বাজারজাতকরণসহ যথাযথ সহায়তার সংস্কৃতি গড়ে না ওঠায়, এই দূর্যোগে বেসামাল হয়ে পড়েছে এই খাত। আর শেষমূহুর্তে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা আসলেও তা কার্যকর হতে সময়ক্ষেপন হওয়ায় ক্ষতিতে পড়েছে কৃষি ও কৃষক।

প্রশাসনসহ সকল দপ্তরের একযোগে কাজ করার প্রক্রিয়া দুর্বল হওয়ায় লকডাউন, সাধারণ ছুটি ও বিশ্ব-দুর্যোগ ঘোষণা নিয়ে চরম বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছে। আবার লকডাউনের মধ্যেও সামাজিক ও ধর্মীয় কিছু অনুষ্ঠানিকতার কারণে বেড়েছে সংক্রমণ। লকডাউনের কারণে গত ৩১শে মে ২০২০ পর্যন্ত সব ধরণের গণযোগাযোগ বন্ধ থাকলেও সমন্বয়হীন সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পোশাককারখানা খুলে দেওয়ায় শ্রমিকদের পড়তে হয়েছে ভয়াবহ যাতায়াত সমস্যায়। একইসঙ্গে আবার ঈদে ব্যক্তিগত গাড়ি মালিকদের যাতায়াত সুবিধা দেওয়ায় ভারসাম্যহীন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।

কর্মহীনতা বাড়ায় বেকারত্ব ও ভিখারীর সংখ্যা বেড়েছে, আবার শ্রমিক সংগঠন নেতাদের দায়িত্বহীনতা ও স্বচ্ছতার অভাবে দেখে গেছে চরম অসন্তোষ। তাছাড়াও রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আস্থাহীনতার মাত্রাও বেড়েছে। ফলে, এই দু:সময়ে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠি সহায়তার জন্য জনপ্রতিনিধির কাছে না গিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সামরিক বাহিনী এমনকি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দারস্থ হয়েছে।

একদিকে রাষ্ট্রিয় পরিসেবা বন্ধ; অন্যদিকে প্রণোদনা সহায়তা নিশ্চিতে সকল স্তরের জনগোষ্ঠিকে অন্তর্ভূক্ত না করার কারণে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি । বেড়েছে অসন্তোষ।

লকডাউন ঘোষণার আগেই হতদরিদ্রদের তালিকা হালনাগাদ করে খাদ্যসহায়তা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ছিল না, খাদ্যসহায়তার স্বল্পতা, বিতরণে অব্যবস্থাপনা ও দূর্নীতি এসবের ফলে, রাষ্ট্রের অনেক উদ্যোগই কাজে দেয়নি। উপরন্তু ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইনের অপপ্রয়োগসহ অনেক ক্ষেত্রেই ঘটেছে বা ঘটছে ব্যক্তি বা গোষ্ঠিবিরুদ্ধ প্রতিহিংসা চরিতার্থ করবার মত অপপ্রয়াস।

নভেল করোনার ইতিবাচক প্রভাব

নভেল করেনার প্রথম ইতিবাচক ফলাফল হচ্ছে, অনলাইন অফিস, প্রশাসন, শিক্ষাকার্যক্রম ও কোর্ট-কাচারিসহ ঘরে বসে অফিস করার মাধ্যমে অনলাইন বাংলাদেশের অনেকটাই এগিয়ে যাওয়া।

মহামারী প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যসুরক্ষায় বেড়েছে জনসচেতন। হতধোয়ার জন্য দামি-দামি পণ্যের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়েছে। বেড়েছে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সৃজনশীলতা, প্লাজমা থেরাপি দিয়ে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার পরীক্ষামূলক উদ্যোগ; গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃক রেপিড টেস্টিং কীট উদ্ভাবনসহ সরকারী-বেসরকারী হাসপাতলের চিকিৎসার ব্যবস্থার আসল স্বরুপ প্রকাশ পেয়েছে, যা পরবর্তিতে মানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে রাষ্ট্রকে সহায়তা করবে।

খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষক ও খামারীদের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনব্যবস্থার গুরুত্ব অনুধাবন হয়েছে। কৃষিপন্য অপচয়রোধ করতে সামরিক বাহিনী কর্তৃক উদ্ভাবিত এক মিনিটের বাজারব্যবস্থা পেয়েছে জনপ্রিয়তা।

বাংলাদেশ পুলিশ, সামরিক বাহিনী ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে মানুষ পেয়েছে সেবার ভাল নজির। হতদরিদ্র জনগণ উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ফোন করা বা বার্তা পাঠানোর সাহস করতে পেরেছে।

অনেক স্বেচ্ছাসেবী ও বেসরকারী ত্রানসহায়তার পরিমান বাড়ানোসহ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের কার্যক্রম খুবই প্রশংসিত হয়েছে। রান্না-বান্নাসহ গৃহস্থালী কাজে পুরুষদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ফাস্টফুড গ্রহণের মাত্রা কমেছে। বেড়েছে জনমানুষের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ও অভিযোজন ক্ষমতা।

দেশের চিকিৎসা, শিক্ষা, শিল্প, প্রবাসীকল্যাণ, পানিসম্পদ, কৃষি, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় সরকার, সমাজসেবা প্রভৃতি দপ্তরের অক্ষমতার ও সীমাবদ্ধতার আলোকে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহণের দিক নির্দেশনা প্রাপ্তি অনেকখানি প্রতীয়মান হয়েছে। আমদানী-রফতানী, বৈদেশিক নির্ভরশীলতা ও দেশিয় উৎপাদনের বিষয়ে সচেতনা বাড়ায় গুরুত্ব পেয়েছে অভ্যন্তরীন স্বক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা।

বিগত তিনমাস বায়ু ও পানি দূষনের মাত্রা কমেছে, ফলে এইসময় প্রতিটি শহরের গাছ-পালার সবুজে ভরা আসল চেহারা দেখতে পাওয়া গেছে। পরিবেশ বিরোধী পর্যটন বন্ধ থাকায় কক্সবাজার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সাগরলতা, ডলফিন, লালকাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবাধ বিচরণ ঘটছে। চট্টগ্রামের হালদা নদীতে রেকর্ড পরিমানে মাছের ডিম আহরিত হয়েছে। সর্বোপরি, পরিবেশবান্ধব উন্নয়নকাঠামো ও পরিকল্পনার গুরুত্ব বেড়েছে।

করোনা পরিস্থিতি দেশের কাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা ও লাভ-ক্ষতি বিবেচনায় পরিকল্পনা করার সুযোগ তৈরী করেছে। তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে পরিবেশবান্ধব শিল্প-কারখানার স্থাপনের। জিডিপিভিত্তিক প্রবৃদ্ধির বিকল্প হিসেবে জনগোষ্ঠির সুস্থ্য ও সুষ্ঠু জীবনযাপনের ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধি হিসাবের আলোচনা সামনে এসেছে।

বাজেট প্রণয়নের গতানুগতিক কাঠামোর বাইরে এসে জনবান্ধব বাজেটকাঠামো প্রণয়ন ও চলমান ব্যবস্থাপনার সংস্কারের আলোচনা প্রাধান্য পেয়েছে। গুরুত্ব অনুধাবন হয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং সম্প্রসারণ ও মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রনে কাঠামো বিষয়ক আলোচনা শুরু করবার।

আলোচ্য অভিজ্ঞতার আলোকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ

১. মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে, সরকারী হাসপাতালের প্রয়োজনীয় স্থাপনা, সরঞ্জাম, চিকিৎসক, নার্স, অন্যান্যকর্মী, এ্যাম্বুলেন্সসংখ্যা, জরুরী চিকিৎসা সেবাকাঠামো বাড়ানোসহ সার্বিক অবকাঠামোর সম্প্রসারণ, সকল প্রকারের দূর্নীতি বন্ধ করা এবং চিকিৎসকদের দায়বদ্ধতা তৈরী করা। বেসরকারী হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজসমুহের স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিৎ করতে জনবান্ধব আইনীকাঠামো তৈরী করা।

২. টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ও সূচকসমূহ অর্জনে সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনেক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগসমূহ জাতির যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় যেন গবেষণালব্ধ সহায়তা দিতে পারে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগসমূহের সাথে সরকারী-বেসরকারী সকল দপ্তরের বিধিবদ্ধ সম্পর্ক স্থাপন দরকার। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ল্যাবরেটরিতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ কাঠামোগত সুবিধা বাড়াতে বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে। এর ফলে শিক্ষা হবে বাস্তবমূখি আর ভবিষ্যতে শিক্ষাঙ্গনে হানাহানি কমবে এবং শিক্ষকরা অনেক বেশি শিক্ষায় মনোনিবেশ করতে পারবে। সকল শিক্ষককে ডিজিটাল শিক্ষাক্রম পরিচালনায় উদ্বুদ্ধ করাসহ শিক্ষাবাণিজ্য রোধ করা।

৩. জাতীয় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক প্রণীত সকল শিক্ষাক্রম পূন:বিবেচনা করতে হবে। যাতে জাতীয় অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাকে বিবেচনায় নিয়ে সার্বজনীন নৈতিকতা, দেশপ্রেম, দৈনন্দিন স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ জীবন-যাপনের ধারণা অর্জন ও চর্চায় রূপান্তরিত করা যায়। বাদ দিতে হবে অপ্রয়োজনীয় পাঠ। এমন শিক্ষাক্রম ও শিক্ষাপদ্ধতি প্রণয়নসহ শিক্ষক প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেয়া। এছাড়াও শিক্ষা প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়াতে শিক্ষক পদ থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষাসচিব পর্যন্ত করবার ব্যবস্থা রাখা।

৪. কৃষকের কষ্টার্জিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার তৈরী ও বাজারজাতকরণ নিশ্চিৎ করতে; উচ্চ ফলনশীল যেসব বীজ ও সার কৃষক পূন:উৎপাদন করতে পারে, তার ব্যবহার বাড়াতে কৃষি বিভাগসহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একসাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি করতে হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়কে খাদ্যপণ্যের সংরক্ষণাগার ও মজুদ বাড়ানোসহ খাদ্যপণ্য বাজারজাতকরণে সরকারী পরিবহনের ব্যবস্থাসহ রেলপরিবহনের সাথে আলাদা কৃষিবগি থাকতে হবে। যেখানে কৃষিপণ্যসহ কৃষক যাতায়াত করতে পারবে। আর সামরিক বাহিনীর উদ্ভাবিত এক মিনিটের বাজার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কৃষি ও খাদ্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষিত করা।

৫. শ্রমিকের দক্ষতা, অধিকার ও প্রবাসী শ্রমজীবীদের কল্যাণে শিল্প, শ্রম, কর্মসংস্থান এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা দরকার। যাতে দেশে শ্রমিক অসন্তোষ না থাকে এবং প্রবাসী শ্রমিকরা অনেক বেশি আয় করতে ও বিদেশে নিরাপত্তা পেতে পারে। যা দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি জারি রাখবে।

৬. স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ, পানিসম্পদ, কৃষি, মৎস্য ও প্রানীসম্পদ, খাদ্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় যে কোন মানবিক বিপর্যয়ে যাতে একসাথে কাজ করতে পারে তার একটি আইনিকাঠামো তৈরী করতে হবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী ২০১৯ কে পর্যালোচনা করে আইনে প্রণীত করা যেতে পারে। সরকারের প্রতিটি দপ্তরের কার্যক্রম আইনের অধিন করা। সকল আইনের বিধিমালা নিশ্চিৎ করা।

৭. বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ক্রমবর্ধমান বাজেটের প্রায় সম্পূর্ণ টাকা আয়কর, মূল্যসংযোজনীকর, আমদানীকর, নিবন্ধনকর, সড়ককর, নবায়নকর, ভ্রমণকর, আবগারিশুল্ক, বিজ্ঞাপনকর, ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকেই আদায় করা হয় । এ সবই জনগণ বিভিন্নভাবে প্রতিবছর পরিশোধ করে থাকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী ১৯৭২-৭৩ সালে ও ১৭৯৭৩-৭৪ সালের বাজেট ছিল যথাক্রমে ৭৮৬ কোটি ও ৯৯৫ কোটি টাকা এবং জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। আর ২০১৯-২০ সালের বাজেট ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা এবং জনগোষ্ঠি প্রায় ২০ কোটি। অর্থাৎ ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে মাথাপিছু রাজস্ব ধার্য ছিল যথাক্রমে ১০৫ ও ১৩৩ টাকা। আর বর্তমানে মাথাপিছু রাজস্ব ধার্য হয়েছে ২৬ হাজার ১৬০ টাকামাত্র। বিগত ৪৮ বছরে রাজস্ব বেড়েছে ২৫০ গুন। অথচ বাজেট ব্যায়ের বিবরণ অনুযায়ী দেশের বৈষম্য বেড়েছে। তাই, বাজেট হতে হবে দারিদ্রবান্ধব।

৮. দারিদ্র রোধ করতে সকল দপ্তরের স্বচ্ছতা নিশ্চিৎ করাসহ দূর্নীতির আইনি বৈধতা বন্ধ করতে হবে। দূর্নীতি দমন কমিশনকে আরো শক্তিশালী, আস্থাশীল ও তাদের কাজের স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।

লেখক, উন্নয়নকর্মী

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন