সুন্দরগঞ্জের সেই পিআইও’র বিরুদ্ধে মামলা কমলো বেতন

সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে অনিয়ম,দুর্নীতি ও লুটপাটসহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন পিআইও নুরুনবী সরকার। দুদকের মামলাসহ তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছিল।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা ||

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিতর্কিত সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অসদাচরণের দায়ে বিভাগীয় মামলা দাযের করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থায়ীভাবে লঘুদন্ড হিসাবে তার বেতন কমানো হয়েছে। এখন তিনি ১০ম গ্রেডের প্রারম্ভিক বেতন পাবেন। বর্তমানে নুরুন্নবী সরকার রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (প্রশাসন-১) উপ সচিব লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়  কর্মরত থাকতে পিআইও নুরুন্নবী সরকার ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে কর্মস্থলে উপস্থিত থেকেও দাপ্তরিক কাজে বাইরে অবস্থান দেখিয়ে পূর্ণ দিনের দৈনিক ভাতা উত্তোলন করেন বলে অভিযোগ রযেছে। এছাড়াও সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের দায়ে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী(শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩ (খ) ও (ঘ) ধারামতে অসদচারণ ও দূর্নীতির দায়ে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ০৫/২০২০।

উল্লেখিত অভিযোগের কারণে পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে  অধিদপ্তর হতে গত বছরের ৩রা সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করে তার বিবরণী পাঠানো হলে তিনি গত ১৫ই অক্টোবর অভিযোগনামার জবাব দেন।

এরপর অভিযোগের বিষয়ে আরও তথ্য অনুসন্ধানের জন্য অধিদপ্তরের পরিচালক (গবেষণা ও প্রশিক্ষণ) এসএম এনামুল কবিরকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৭শে ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে পিআইও নুরুন্নবী সরকারের  বিরুদ্ধে আসা দুর্নীতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রামাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। অফিস আদেশে  আরও বলা হয় পিআইও নুরুন্নবী সরকারকে দন্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলতি বছরের ১০ই জানুয়ারী দ্বিতীয় কারণ দর্শানো জন্য বলা হলেও তিনি কোন জবাব দেননি। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩ (খ) ও (ঘ) অনুযায়ী দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে একই বিধিমালার  বিধি ৪ এর উপবিধি (ঘ) মোতাবেক লঘুদন্ড  হিসেবে স্থায়ীভাবে বেতন  গ্রেডের  নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণ আদেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে অনিয়ম,দুর্নীতি ও লুটপাটসহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন পিআইও নুরুনবী সরকার। দুদকের মামলাসহ তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছিল। ২০১৯ সালের জুন ক্লোজিংয়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকতাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কোটি টাকার বিলে স্বাক্ষর নেন পিআইও নুরুনবী সরকার। বদলীর আদেশ হওয়ার পর সুন্দরগঞ্জ ছাড়তে নারাজ  নুরুনবী সরকার উচ্চ আদালতে গিয়েও ব্যর্থ হন।

সবশেষ তিনি জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের ১২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করেছিলেন।

সংবাদ সারাদিন