|| অনলাইন প্রতিনিধি, নীলফামারী ||
নীলফামারীর সৈয়দপুরে যৌতুকের কারনে লাবলী বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধুকে ফাঁস দিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী একরামুল হক চৌধুরীর বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার।
বুধবার উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আইসঢাল হাজীপাড়ায় নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন লাবলীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মচারী মোঃ আব্দুল হাফিজ (৭০)। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন লাবলীর মা রশিদা আক্তার, বড় বোন কেয়া আক্তার, দুলাভাই মোঃ আমজাদ হোসেন, ভাই মমিনুল ইসলাম, নওশাদ আলী ও শরিফুল আলম প্রমুখ।
লাবলীর বাবা আব্দুল হাফিজ জানান, আমার মেয়ে লাভলী বেগমের সাথে ১০ বছর আগে বিয়ে হয় খাতামধুপুর ইউনিয়নের ঝারুয়াপাড়া গ্রামের আজিজ চৌধুরীর ছেলে একরামুল চৌধুরীর সাথে। এর মধ্যে তার লাবীব একটি ছেলে রয়েছে বর্তমানে তার বয়স সাড়ে আট বছর। বিয়ের সময় যৌতুক দেয়ার পরেও প্রায় সময় মারধর করে মেয়েকে আমার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে কয়েকবার বিচার সালিশের মাধ্যমে আমার মেয়েকে জামাই তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
সম্প্রতি জামাই একরামুল হক চৌধুরী তারিখ গুল কোম্পানীতে চাকরীর সুবাদে বিরামপুরে বসবাস শুরু করে। গত ১ মে আমার মেয়ে নাতি লাবীবসহ বিরামপুরে জামাইর সাথে বসবাস শুরু করে। সেখানে যাওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়িত আমার মেয়েকে নির্যাতন করতে থাকে জামাই একরামুল। গত ৩ মে বিকেলে বিরামপুরের বাড়ির মালিক মোবাইল ফোনে জানায় আমার মেয়ে লাভলী বেগম আত্মহত্যা করেছে। আমরা সেখানে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছে জানতে পারি একরামুল তার বোন রোজনা আকতার ও তার স্বামী মোস্তাফিজুরের সহায়তায় নির্যাতন করে মেরে ফেলে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে।৪ মে আমরা মেয়ে লাভলীর মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করি।
কিন্তু এ হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। একরামুলের কর্মস্থল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তার পরিবারের লোকজন বিরামপুরের প্রভাবশালীদের দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেছে। সে কারণে হত্যার পর থেকে ছেলে লাবীব কে নিয়ে পালিয়ে থাকা একরামুলককে ধরা বা তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে পুলিশ।
কোনভাবেই যেন হত্যার অভিযোগ না দেয়া হয় সেজন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হয়। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ নেয়া হলেও সেখানে সুকৌশলে মৃত্যুর বিষয়টাকে আত্মহত্যা হিসেবেই চালিয়ে দিতে থানার মুন্সির মাধ্যমে অভিযোগপত্র লিখে নিয়ে বাদি স্বাক্ষর নেয়া হয় লাবলীর বাবা আব্দুল হাফিজের।
এসময় লাবলীর মৃতদেহ গোশল করানোর সময় উপস্থিত ২ জন মহিলা জানান, মৃতদেহে স্পষ্ট নির্যাতনের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। তার মাথার চুলগুলো যেন ছিড়ে ফেলা হয়েছে। পিঠে লাঠি দিয়ে আঘাতের কালো দাগ ও পায়ে জখম বিদ্যমান।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে বিরামপুর থানা পুলিশ প্রফেসর পাড়ার মোঃ রুহুল আমিনের ভাড়া দেয়া বাসার তালাবদ্ধ ঘর থেকে লাবলীর লাশ উদ্ধার করে। পরে লাবলীর বাবা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। মামলা নং ২।
সসা/এএম/এসএম