বাগেরহাটে শিশু অপহরণ ও হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মা-বাবার কোল থেকে তিনমাস বয়সী শিশু আব্দুলল্লাহ অপহরণ ও হত্যা মামলায় তিন আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আাদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামীকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন। রোববার দুপুরে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম আসামীদের উপস্থিতিতে এই আদেশ দেন।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট ||

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মা-বাবার কোল থেকে তিনমাস বয়সী শিশু আব্দুলল্লাহ অপহরণ ও হত্যা মামলায় তিন আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আাদালত। একই সাথে প্রত্যেক আসামীকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন। রোববার দুপুরে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম আসামীদের উপস্থিতিতে এই আদেশ দেন।

দন্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশান বাড়িয়া এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদারের ছেলে মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদার (২১), জসিম হাওলাদারের ছেলে মহিউদ্দিন হাওলাদার (২২) এবং আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ছেলে মো. ফয়জুল ইসলাম (২৯)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ই মার্চ ভোর রাতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামে বাবা-মায়ের শোবার ঘর থেকে তিন মাস বয়সী শিশু আব্দুল্লাহকে চুরি করে দুর্বৃত্তরা।ওই দিনই শিশুটির বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

পরে চুরিরসময় নেয়া আব্দুল্লাহর বাবা সোহাগ হাওলাদারের মুঠোফোন থেকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে দুর্বৃত্তরা।আসামীদের চাওয়া অনুযায়ী সোহাগ ১০ লাখ টাকা দিলেও তারা শিশুটিকে ফেরত দেয়নি। ১৩ই মার্চ মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

হৃদয়ের তথ্যমতে ১৭ই মার্চ দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা এলাকার একটি রাস্তার পাশে থাকা টয়েলেটের মধ্য থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে হৃদয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরও দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ৯ই মার্চ আদালতে চার্জ গঠন করা হয়। ২৫ জন সাক্ষির মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহন ও যুক্তি তর্ক শেষে আদালত এই রায় দিলেন।

মামলার রাষ্ট্রীয় কৌসুলী রণজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় আসামীদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তিন আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া দন্ডবিধি ৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তিন আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।আমরা এই রায়ে খুশি হয়েছি।

মামলার রায়ে সন্তোষ জানিয়েছেন শিশুটির বাবা ও মামলার বাদী সিরাজুল ইসলাম সোহাগ। রায় শোনার পরে তিনি আইনজীবী, বিচারক, পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, শুধু টাকার জন্য ওরা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে। আমার সন্তানকে ফেরত পাওয়ার জন্য ওদের চাহিদা মত টাকাও দিয়েছিলাম তারপরও ওদের মন গলেনি। শেষ পর্যন্ত আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে নির্দয়ভাবে মেরে ফেলল ওরা। আজকে আদালত যে রায় দিয়েছে তা এ ধরণের অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমি এই রায়ে খুব খুশি হয়েছি। এই মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শেখ মো. সাহিবুর রহমান সাহেব ও মো. এনামুল হোসেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন