|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
করোনার সার্বিক অভিঘাতে চলতি বছরের দ্বিতীয় তিনমাসে দেশে আরও ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ গরীব হয়েছে। এই ধারণা দিয়েছে রাষ্ট্রের উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্সটিট্উট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-বিআইডিএস। বুধবার ভিডিও আলোচনা অনুষ্ঠান ওয়েবিনারে এতথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বরাতে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে সরকার দারিদ্র্য কমানোর যে লক্ষ্য ঠিক করেছিল, তা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
‘ইন দ্য শ্যাডো অব কোভিড কোপিং, অ্যাডজাস্টমেন্ট, রেসপনসেস’ শীর্ষক বিআইডিএসের এই ক্রিটিক্যাল কনভারসেশন্স ওয়েবিনারে এও জানানো হয়, সারাদেশে কোভিড পরিস্থিতিতে শহরের শ্রমজীবী মানুষের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ। আর গ্রামাঞ্চলে ১০ শতাংশ আয় কমেছে শ্রমজীবীদের।
বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো বিনায়ক সেন জানান, কোভিড-১৯-এর প্রভাব কাটাতে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ লকডাউন অর্থনৈতিকভাবে টেকসই নয়। এতে যেমন দারিদ্র্যের হার বেড়েছে, অন্যদিকে কোভিডের আগেই যাঁরা দরিদ্র ছিলেন, তাঁদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
তিনি এও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অর্থবরাদ্দ বাড়িয়ে এই ক্ষতি পূরণ করা যাবে না। বরাদ্দ বাড়িয়েও লাভ হবে না, কারণ এই ভাতা ও সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল মানুষ বাছাই করার প্রবণতা আছে দেশে। ফলে যাঁদের দরকার, তাঁদের অনেকেই তালিকায় ঢুকতেই পারেন না। দেখা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে গরীব নয় এমন সচ্ছল মানুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ, খাদ্যসহায়তার ক্ষেত্রে সেটা ৩২ শতাংশ, মাতৃত্বকালীন ভাতার ক্ষেত্রে ৪৪ শতাংশ, বৃত্তির ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ।
কোভিডের সার্বিক অভিঘাতে দেশে গরীবি কমানোর হার কমে যাবে জানিয়ে বিনায়ক সেন বলেন, এতে ২০৩০ সালের মধ্যে সামাজিক উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজির লক্ষ্য অনুযায়ী দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার যে লক্ষ্য ছিল, তা অর্জন করা কঠিন হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয় কমাতে এই খাতে বরাদ্দ জিডিপির আড়াই শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে আরও সমতাভিত্তিক মডেল অনুসরণ করতে হবে।