|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ||
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে বললেও তা মানতে পারছে না ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় এককভাবেই ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে এও সিদ্ধান্ত হয় যে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঁচটির বদলে তিনটি ইউনিটের ব্যানারে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে নয়, এককভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। গত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত এবারও বহাল রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ওয়েটিং লিস্ট থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে চায়, তবে ভর্তি তা করাতে পারবে।
এদিকে ইউজিসি’র নির্দেশের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত স্বায়ত্ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আমরা আলাদা পরীক্ষা নিতেই পারি। স্বায়ত্ত্বশাষিত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়েও একসঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠান সম্ভব না।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে ইউজিসি দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার নিদের্শ দিয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাঁচটি স্বায়ত্ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় এককভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাঁচটি ইউনিটের বদলে থাকছে তিনটি
এদিকে আগামী (২০২১-২২) শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটির বদলে তিনটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হবে। সেক্ষেত্রে ঘ ও চ-ইউনিটের পরীক্ষা বাতিল হয়ে খ-ইউনিটের সঙ্গে হবে। আগামী বছর থেকে একই ন্যাচারের দুটি (খ ও ঘ ইউনিট) পরীক্ষা হবে না। এক্ষেত্রে কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘আগামী বছর থেকে ঘ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরীক্ষা না হলেও যেহেতু খ-ইউনিটে পরীক্ষা হবে, তাই এই ইউনিটের নাম পরবর্তন করে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
গৃহীত সিদ্ধান্তে কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একই সিলেবাসে তিন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা হয়। এতে পরীক্ষাথীদের ভর্তি ফরম তোলার জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়। শিক্ষার্থীদের খরচ কমাতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন পদ্ধতিতে বিভাগ পরিবর্তনের বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন বলেন, প্রত্যক শিক্ষার্থী নিজ নিজ বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দেবে। তারপর অর্জিত ফলাফলের ভিত্তিতে চয়েস দিয়ে অন্য বিভাগের বিষয়ে ভর্তি হতে পারবে।
এছাড়াও আগামীতে ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস পাঠ্যবই নির্ভর করা হবে বলেও জানান তিনি। এর কারণে হিসাবে তিনি বলেন, গ্রামের শিক্ষার্থীরা সাধারন জ্ঞানে শহরের শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে। তাই গ্রাম-শহরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে ডিনরা সম্মতি দিয়েছেন। এরপর এটি একাডেমিক কাউন্সিলে যাবে। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পাঁচটি ইউনিটে ভাগ করে নেওয়া হয়। এগুলো হলো- বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক-ইউনিট, কলা অনুষদভুক্ত খ, বাণিজ্য অনুষতভুক্ত গ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ-ইউনিট এবং চারুকলা অনুষদভুক্ত চ ইউনিট। ঘ-ইউনিটের মাধ্যমে গ্রুপ পরিবর্তন করে অন্য গ্রুপের বিষয়গুলোতে ভর্তি হতে পারতেন শিক্ষার্থীরা।