অভিযোগ: পকেটে হেরোইন ঢুকিয়ে টাকা নিয়েছেন বেনাপোলের মাদক কর্মকর্তারা

জোর করে পকেটে দুই গ্রাম হেরোইন ঢুকিয়ে ৭০ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে যশোর মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের (আবগারি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। শুধু টাকাই নেননি তারা তাদের ভাষায় অভিযুক্ত মোস্তাব আলীকে আদালতেও চালান করে দিয়েছেন। 

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, বেনাপোল ||

জোর করে পকেটে দুই গ্রাম হেরোইন ঢুকিয়ে ৭০ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে যশোর মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের (আবগারি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। শুধু টাকাই নেননি তারা তাদের ভাষায় অভিযুক্ত মোস্তাব আলীকে আদালতেও চালান করে দিয়েছেন।

মোস্তাব আলীর স্ত্রী চায়না খাতুনের অভিযোগ, যশোর মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর (আবগারি) কর্মকর্তারা তাদের বাড়িতে যান বুধবার দুপুরে। স্বামী মোস্তান আলীকে হাতকড়া পরিয়ে বাড়ি তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে নিজেদের কাছে থাকা দুই গ্রাম হেরোইন পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। এই টাকা না পেয়ে মোস্তানের বাড়িতে থাকা ৭০ হাজার টাকাসহ তাকে নিয়ে যান মাদক কর্মকর্তারা।

বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার তোরাব আলীর ছেলে মোস্তাব আলীর (মোস্তান) স্ত্রী চায়না খাতুন শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বলেন, তাদের বাড়িতে বুধবার বেলা ১ টার সময় আকস্মিক ভাবে ৮/১০ জনের একটি দল মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচয়ে দিয়ে প্রবেশ করে। এসময় তার স্বামী বাড়িতে কাজ করছিলেন। তাকে হাতে হাত কড়া দিয়ে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় এবং বাথরুমে ফেলে বেধড়ক মারপিট ও বাড়ির নারী সদস্যদের বিশ্রী ভাষায় গালাগাল করে। বাড়ি তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে হঠাৎ একটি শার্টের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে একজন সদস্য বলেন, স্যার মাল পেয়েছি বলে একটি কাগজের পুটলি বের করে দেখায়।

চায়না খাতুনের দাবি, তার স্বামীর পকেটে কোন মাদকদ্রব্য ছিল না। এরপর আমার বাড়িতে থাকা একটি ড্রয়ারে ৬০ হাজার ও একটি বক্সে থাকা ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই টাকা নিয়ে আমার হাতে দিয়ে মোবাইলে ভিডিও করে বলে তোমার টাকা পেয়েছ। তখন আমি বলি পেয়েছি।  এরপর আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। আমি দিতে পারব না বললে ২ লাখ টাকা এরপর ১ লাখ টাকা দাবি করে। আমি কোন টাকা দিতে পারব না বললে পরে আমাকে ফেরত দেওয়া ওই ৭০ হাজার  টাকা নিয়ে যায়। এ সময় তারা আমার স্বামীকেও নিয়ে যায়।

এ বিষয় পাশের রুমে থাকা চাঁদনি বলেন, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের লোক ওই রুম তল্লাশির সময় বাড়ির কাউকে ওই রুমে যেতে দেয়নি। তবে কোন মাদক না পেয়ে উচ্চস্বরে গালাগালি করে এবং বলে মাল বের করে দে।

মোস্তানের ভগ্নিপতি বেল্লাল হোসেন জানান, দিনে দুপুরে তারা সিভিল পোশাকে এসে একজনের বাড়ির মধ্যে ঢুকে যে কর্মকান্ড করলো তাতে আমরা কিভাবে গ্রামে বসবাস করবো। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।

এ বিষয় যশোর মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ওই বাড়িতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছি। তবে কোন টাকা নেয়নি। আমরা যে টাকা পেয়েছি তা দিয়ে এসেছি। আমাদের কাছে ভিডিও রয়েছে। টাকা নেওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন। তবে মোস্তানকে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে যশোর মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অতিঃ দায়িত্ব) মো. বাহাউদ্দিন জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। হেরোইনসহ মোস্তানকে আটক করা হয়েছে। ওই বাড়ি থেকে আমার কোন স্টাফ টাকা নিয়ে আসার প্রশ্নই ওঠে না। ওই বাড়ির লোকজন যে অভিযোগ করেছেন, সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বিষয়টি নিয়ে তারা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

সংবাদ সারাদিন