হবিগঞ্জে রাস্তা নির্মাণে বালুর বদলে মাটি!

হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর থেকে মশাজান এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার নির্মাণাধীন রাস্তায় বালুর বদলে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি। সেই সঙ্গে অভিযোগ রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতিরও

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||

হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর থেকে মশাজান এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার নির্মাণাধীন রাস্তায় বালুর বদলে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি। সেই সঙ্গে অভিযোগ রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতিরও।

এ নিয়ে স্থানীয়রা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন নিরব ভুমিকায় কর্তৃপক্ষ। ফলে, এ সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাতের ধাক্কাতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ। ঠিক ভাবে রোলিং না করে  বালির বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি পাথর ও ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের বিটুমিনের সাথে মেশানো হচ্ছে কেরোসিন। অনেক স্থানে নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই ডেবে যাচ্ছে। রাস্তার মাঝে উঁচু-নিচু গর্তের দেখা মিলছে।

সোমবার সকালে পইল ইউনিয়ন অফিস সংলগ্ন ও দেবপাড়ায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।  অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, প্রায় ৩০ বছর পরে এই রাস্তাটি নির্মাণ হচ্ছে। বহু স্বপ্নের লালিত পইলের রাস্তায় কোন অবস্থাতেই দুর্নীতি করতে দেয়া যাবে না। তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শায়েস্তানগর বাজার থেকে মশাজান বাজার পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে তিনটি আরসিসি বক্স কালভার্টও আছে।

জানা যায়, এলজিইডি হবিগঞ্জ-এর আওতায় আরআইআইপি-১১ প্রজেক্টের মাধ্যমে মেরামত কাজ শুরু হয়। ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার ১৩৩ টাকার মূল্যের কাজটি পায় ফজলুল রহমান এন্ড লিওন এন্টারপ্রাইজ। যার স্বত্বাধিকারী হাজী মোঃ দুলাল (ওরফে রাডার দুলাল)।

কাজের মেয়াদ ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল। পরবর্তীতে মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ মে ২০২১ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে রাস্তার প্রায় ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

তিনটি আরসিসি বক্স কালভার্টের মধ্যে একটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে চলমান কাজের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি দুই কোটি টাকা অগ্রিম বিল উঠিয়ে নিয়েছে।

ফজলুর রহমান এন্ড লিওন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হাজী মোঃ রাডার দুলাল বলেন, এলাকার মানুষ না বুঝেই বিভিন্ন কথা বলছেন। মূলতঃ আমরা ভালো মানের কাজই করছি। তিনি বলেন, রাস্তার কাজে যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম সংবাদ সারাবেলাকে জানান, পইলের রাস্তার অভিযোগের কথা আমরাও শুনেছি তবে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পইল ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মইনুল হক আরিফ জানান, এলাকার অনেকেই আমার কাছে জানিয়েছেন কাজে অনিয়ম হচ্ছে । দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৌশলীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার উদ্যোগ নিবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন