শ্রীমঙ্গলে ধান কাটা আর করোনা সচেতনায় কাজ করছে স্বেচ্ছাকর্মীরা

|| অনলাইন প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) ||

করোনা পরিস্থিতিতে বোরোসহ অন্যান্য ধান কাটার শ্রমিক সংকটে বিকল্প পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। স্বাভাবিক সময় দেশের মধ্যাঞ্চল ময়মনসিংহ এবং কিশোরগঞ্জ থেকে মৌসুমী শ্রমিকরা ধান কাটতে আসেন সিলেটে। এছাড়াও উপজেলার চা বাগান এলাকার বেকাররাও এ কাজে যোগ দিতেন। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতিতে মৌসুমি এসব শ্রমিক আসতে না পারায় ধান কাটা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষক। শ্রমিক সংকটের এই সময়ে স্থানীয় তরুন স্বেচ্ছাসেবী, ছাত্র ও যুবকদের নিয়ে ধান কাটার পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, এ বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় হাওর এলাকায় ৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর এবং সমতলে ৫ হাজার ৭৬২ হেক্টরসহ মোট ৯ হাজার ৪১২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরাঞ্চলের প্রায় ৩৫ শতাংশ ব্রি -২৮ ধান কাটার উপযোগী হয়েছে। প্রায় ২০ শতাংশের ওপরে ধান কৃষকের গোলায় উঠে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সব ধরনের ধান পাকতে শুরু করবে।

করোনার এই দুর্যোগসময়ে কৃষককে পাকা ধান তুলতে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সহায়তা করা এবং গ্রামে গ্রামে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা ও নেহাত দরকার না হলে বাইরে বের না হওয়ার মত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে ইতোমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলেছে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, বোরো ধান চলমান করোনা যুদ্ধের রসদ এবং জাতির জন্য আশীর্বাদ। এখন আমাদের লক্ষ বাম্পার ফলনকে যে কোন মূল্যে ঘরে তোলা। তাই আমরা ছাত্র, তরুন, যুবকদের আহবান করছি, পুরো জাতির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এগিয়ে আসার জন্য। এক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের সহায়তা করবে।

উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক রাজু দেব রিটন বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগ সর্বদা প্রস্তুত। যখনই প্রয়োজন হবে আমাদের ডাকলেই আমরা কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে কাজে নেমে পড়বো।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আফজল হক বলেন, ‘আমরা বোরো ধান তোলার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছি। এবং আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি দেশকে ক্ষুধা, অতি দারিদ্র থেকে রক্ষা করতে যে যার যার মতো কৃষককে ধান ঘরে তুলতে সহায়তা করি।

শ্রীমঙ্গল ৩ নম্বর ইউপি চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় বলেন, আশা করা যায়, সবার স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে ঝড়–বৃষ্টি, অকাল বন্যার মত প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগের আগেই কৃষকের গোলা ধানে ভরে যাবে। তবে শ্রীমঙ্গল বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চল। ফলে এই সময়ে আকাশ থাকে মেঘলা এবং বেশ বৃষ্টি হয়। সরকার যদি, মিলারের মাধ্যমে কৃষকের গোলা থেকে সরাসরি ধান কেনার ব্যবস্থা করেন তাহলে কৃষকরা যথেষ্ট উপকৃত হতেন। আমাদের সামনের দিনগুলোতে ধান শুকানোর কর্মযজ্ঞ হলো মূল চ্যালেঞ্জ।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন