মানুষের কাছে আশ্রয় নিয়ে খুন হলো দুর্গত বণ্যপ্রাণী

|| অনলাইন প্রতিনিধি, সদর(সিলেট) ||

বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে কবলিত হয় আবাস। প্রাণে বাঁচতে আশ্রয় নেয় উঁচু লোকালয়ে। ভেবেছিল মানুষ হয়তোবা তাদের নিরাপদ আশ্রয় হবে। কিন্তু বিধিবাম! বন্যা থেকে বাঁচতে লোকালয়ে এসে খুন হলো ওরা। শুক্রবার খুন করা হয় দুইটি মেছো বাঘ, ছয়টি শেয়াল আর একটি বেজিকে। শুধু ওদের হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি অমানবিক মানুষ। ওদেরকে ফেলে দেওয়া হয় নদীতে।

নিষ্ঠুর এই হত্যাকান্ড ঘটেছে সিলেটের গোয়াইনঘাটের জৈন্তাপুরে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ফতেহপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বালিপাড়ার জনৈক আলাউদ্দিনের বাড়ীর সামনের রাস্তায় এসব প্রাণীকে কুপিয়ে খুন করে স্থানীয় আব্দুল হালিম (২৫) ও শাহরিয়ার আহমদসহ ৭ থেকে ৮ জনের একদল মানুষ। এরআগে ওরা বন্যায় আটকে পড়া প্রাণীগুলোকে ফাঁদে ফেলে আটক করে। খুনের পর এগুলোকে কাপনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

ঘটনা জানতে পেরে সিলেট বিভাগের সারি রেঞ্জের বন কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন ঘটনাস্থলে যান। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে উক্ত হালিম ও শাহরিয়ার গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেন জৈন্তাপুর মডেল থানায়। মামলার এজাহারে রাষ্ট্রের বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অমান্য এবং কাজটিকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি এসব প্রাণীর দাম পাঁচ লাখ টাকা বলেও জানান এজাহারে।

মামলার এজহারে বন কর্মকর্তা এও জানান, সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে জৈন্তাপুর সীমান্তসহ আশপাশের এলাকা পানিতে ডুবে যায়। এতে পাহাড়ী জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে আশ্রয় নেয় অনেক বণ্যপ্রাণী।

স্থানীয় বিশিষ্ট মানুষের সহায়তায় বন কর্মকর্তারা প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নেওয়া এসব প্রাণীর কোন ক্ষতি না করতে সচেতনামূলক প্রচারনাও চালিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে এমন একটি নিষ্ঠুর কাজ করায় হালিম ও শাহরিয়ার গংদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছেন এলাকার মানুষ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন