অনলাইন প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (সিলেট)
শ্রীমঙ্গলের আকাশে ছিলো সেদিন কালো মেঘের ঘনঘটা, বৃষ্টি- ঝড়ো হাওয়ার সাথে বিজলিও চমকাচ্ছে সমানতালে। বৃষ্টির কারনে অনেকেই ত্রাণ তৎপরতা গুটিয়ে নিয়েছিলেন সেদিনের জন্য। দিনটি ছিল বৃহষ্পতিবার। এরই মধ্যে শ্রীমঙ্গল র্যাব- ৯ এর কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম জানতে পান, শ্রীমঙ্গল উপজেলার শব্দকরপাড়া বস্তির বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবার সারাদিন না খেয়ে আছে। খাবার না পেলে রাতেও সন্তানসন্ততি নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে গরীব এই মানুষগুলোকে। ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই দুর্গতদের কাছে ছুটে যান র্যাব কর্মকর্তা শামীম। গাড়ি চলাচলের পথ না থাকায় তিনি ও তার সহকর্মীরা হাতে ও কাঁধে ত্রাণের বস্তা নিয়ে পৌঁছন অভুক্ত মানুষগুলোর কাছে। ১৫ টি পরিবারের কাছে তুলে দেন চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য সামগ্রী।
শব্দকরপাড়ার বিধবা সন্ধ্যা রানী কর, যিনি তার দুই শিশু কন্যাসহ সারাদিন ছিলেন অভুক্ত। ঝড়বৃষ্টি আর রাত হয়ে আসায় এক প্রকার নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিলেন যে, এরাতেও আর খাবার মিলবে না। ঠিক তখনই র্যাব সদস্যরা পৌঁছে যান খাবার অন্য নিত্যপণ্য নিয়ে। জানতে চাইলে সন্ধ্যা রানী বলেন, “বৃষ্টি বাদলা হতে দেখে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম যেন, সারাদিনের উপোস বাচ্চাগুলোকে রাতেও আর উপোস না থাকতে হয়। আমি না খেয়ে থাকি, বাচ্চাগুলোর একটা ব্যবস্থা যেন হয়। এমন সময় র্যাব স্যার চালডাল নিয়ে হাজির আমার বাড়িতে।’’
নিজেদের এই ত্রাণকাজ নিয়ে নিজের আইডিতে এবং ফেসবুক পে্ইজে একটি ভিডিও পোস্ট করেন র্যাব কর্মকর্তা শামীম। যাতে দেখা যায়, খাদ্য সাহায্যের প্যাকেট নিতে গিয়ে অঝোর ধারায় চোখের জল ফেলছেন বিধবা সন্ধ্যা রানী কর। এএসপি শামীম এসময় বোন ডেকে তাকে সান্তনা দিচ্ছিলেন।
অন্যদিকে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্থানীয় কালাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজুল ঐ এলাকায় যান এবং ৪০ টি পরিবারকে প্রশাসনের মাধ্যমে সহায়তা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।#
বৃষ্টির মধ্যেই অভুক্ত সংখ্যালঘু পরিবারে খাবার পৌঁছে দিলো র্যাব
- এপ্রিল ৪, ২০২০
- ৩:৪৮ অপরাহ্ণ
- প্রিন্ট সংস্করণ