|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সিলেট ||
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ মারা যাওয়ার ঘটনায় গতকাল রোববার সাড়ে পাঁচঘন্টা অনশন করেন তাঁর মা সালমা বেগমসহ স্বজনেরা। সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনে অবস্থান করেন অনশনে করেন তারা। তবে বিকেলে সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অনুরোধে জুস পান করে অনশন ভাঙেন সালমা বেগম।
দুপুর সাড়ে ১২টায় সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে নিহত রায়হানের মা সালমা বেগমসহ স্বজনেরা অনশনে বসেন। রায়হান হত্যার মূল অভিযুক্ত সদ্য বহিস্কৃত ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ সকল আসামিদের গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত অনশনে থাকার কথা জানান তাঁর মা সালাম বেগম।
ওই সময় রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, ‘এই ফাঁড়িতে রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে। এই ফাঁড়ি থেকে আমার লাশ যাবে। আর কোনো রায়হান যাতে এমন নির্মমভাবে মারা না যায়।’
এর আগে এসআই আকবরসহ সকল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় রায়হানের এলাকাবাসী। সেই আল্টিমেটাম শেষ হয় গত বুধবার। পরে বুধবার আবারো নতুন করে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় এলাকাবাসী। কর্মসূচির মধ্যে ছিল, বৃহস্পতিবার পিবিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে এলাকাবাসী ও রায়হানের পরিবারের সাক্ষাত, শুক্রবার জুমার নামাজে মসজিদে মসজিদে রায়হানের জন্য মোনাজাত ও শনিবার ছিল মানববন্ধন। দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি শেষ হলেও আকবরসহ সকল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না দেখায় হতাশা থেকেই অনশনে বসেছিলেন তারা।
গত ১১ অক্টোবর সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু হয়। শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে রায়হান মারা যান। তবে নিহতেরদ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ছিল পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর ও নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি।