|| অনলাইন প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল,(মৌলভীবাজার) ||
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও এই আইনে দায়ের করা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সিরাজুম মুনিরা, রাষ্ট্রচিন্তার দিদার ভূঁইয়া, কিশোর, মোস্তাক, কাজলসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সকল আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে।
বৃহস্পতিবার (১৮জুন) দুপুরে শ্রীমঙ্গল শহরের চৌমোহনা চত্বরে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সংগঠক প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর মৌলভীবাজার জেলা শাখার সদস্য আবুল হাসান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জলি পাল, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা জাবেদ ভুঁইয়া, মানবাধিকার কর্মী ও এশিয়ান টিভির শ্রীমঙ্গল – কমলগঞ্জ প্রতিনিধি এসকে দাশ সুমন, গণজাগরণ মঞ্চ শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার মুখপাত্র ও সিলেট টুডে টোয়েন্টি ফোর নিউজ পোর্টালের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হৃদয় দাশ শুভ, ছাত্র ইউনিয়ন মৌলভীবাজার জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক পিনাক দেব প্রমুখ।
এসময় সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। বিতর্কিত এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। ভিত্তিহীন অভিযোগে সম্প্রতি শিক্ষক, সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট ও একজন লেখককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার করেছে সরকার। গোটা দেশবাসী গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, গত কয়েকদিন ধরে দেশের কয়েক জায়গায় বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে সরকারের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতার ওপর লেখালেখি করার কারণে বেশ কয়েকজনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সর্বশেষ গত ৫ মে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট , লেখক, ব্যবসায়ী ও পাঁচ থেকে ছয়জন অজ্ঞাতনামাসহ ১৬ থেকে ১৭ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে র্যাব। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে। যথাক্রমে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর,সমাজকর্মী দিদারুল আলম ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী মোস্তাক আহম্মেদ ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে। এর আগে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে নাটকীয়ভাবে ৫৩ দিন পর ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবী জানানো হয়।
সম্প্রতি এই আইনে বেশ ক’জন সাংবাদিক ও লেখককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধারণ নাগরিকরাও রেহাই পাচ্ছেন না। সরকারের সমালোচনা করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। এই আইনে মামলা ও গ্রেফতারের যে সব ঘটনা ঘটছে পরিস্কারভাবে তা গণমাধ্যম ও বাক স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি।
সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা জাবেদ ভূঁইয়া সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘করোনার সময় সরকার চুড়ান্ত পর্যায়ের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। করোনার সময় মানুষের ঘরে খাবারের ব্যবস্থা নেই। মানুষের মৌলিক অধিকার পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করে নির্যাতন করছে। মানুষ পুলিশ নাম শুনলে ভয় পায়। পুলিশকে তারা ব্যবহার করছে, ভাবমুর্তি উন্নয়নের জন্য। দিদার ভূঁইয়াকে মিথ্যা মামলায় দিয়েছে। মন্ত্রীদের সমালোচনা করা যাবে না, সিরাজুম মুনিরা নামে শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে, পুলিশ রিমান্ড চায়। পুলিশি রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে দিতে হবে। আওয়ামী লীগের সরকার ব্যবসায়ীদের সরকার হয়ে গেছে। ্এএই ডিজিটাল আইন বাতিল করতে হবে। এই পুলিশকে, এই রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চাই। এই সরকার আছে বলে মনে হয়না, পুলিশ দিয়ে সরকার ও রাষ্ট্র ধড়পাকড় করছে।’