|| সারাবেলা প্রতিনিধি, জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) ||
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় সুরমা নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাচনা বাজার ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার। সুরমা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে জমি, ঘরবাড়ি, মসজিদসহ ভিটেমাটি। এই গ্রামে অর্ধশত পরিবার ভাঙ্গনের কবলে শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আতঙ্কে রয়েছে গ্রামের আরও অনেক পরিবার। গ্রামবাসীর অভিযোগ, তারা বারবার বিভিন্ন মহলে ভাঙ্গনের ব্যাপারে দাবি জানালেও কোন উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না।
নূরপুর গ্রামের বাসিন্দা রেজওয়ানুল আহমদ আলম জানান, ভাঙ্গন রোধে অনেক আবেদন নিবেদন করেছে গ্রামবাসী। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ফল পাওয়া যায়নি।
একই গ্রামের মজুমদার পাঠান জানান, আমার ঘরবাড়িসহ সবকিছুই নদী ভাঙ্গনে তলিয়ে গেছে। এখন আমার আর কোন অবলম্বন না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছি।
নূরপুর মসজিদের মোতওয়াল্লী মো. রইছ মিয়া জানান, আমার বাড়িসহ গ্রামের শত বছরের পুরাতন মসজিদটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। বর্তমানে এই মসজিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের নামাজ পড়তে হচ্ছে।
সাচনা বাজার ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান জানান, ইতিমধ্যে গ্রামের মসজিদসহ প্রায় ৪০-৪৫টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে নূরপুর গ্রামের আরও অর্ধশতাধিক পরিবার।
সরজমিনে নূরপুর গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক বছরে ভাঙ্গনে মসজিদসহ অসংখ্য বাড়িঘর সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে আরও অনেকগুলো বাড়ি। গ্রামের তহুর মিয়া, মজুমদার পাঠান, ছায়েদ মিয়া, আব্দুল হামিদ, আলাউর রহমান, হাবি রহমান, আব্দুল বারিক, মো. উমর আলী, শাহাব উদ্দিন, কাওসার আহমেদসহ আরও অনেকের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরও ২০-২৫টি বাড়ি ভাঙ্গনের মুখে। যেকোন মুহূর্তে সুরমার পেটে এসব বাড়িঘর তলিয়ে যেতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা।
এছাড়াও সাচনা-শুকদেবপুর যোগাযোগের একমাত্র রাস্তার নূরপুরের সামনে অল্পকিছুদিনের মধ্যে নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, নূরপুরসহ ভাঙ্গনের শিকার উপজেলার সকল গ্রাম-বাজারের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদে সিদ্ধান্ত নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হবে। ভাঙ্গন এখনই রোধ করা না হলে বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।