জনবরিুদ্ধতায় হবিগঞ্জের দুই ওসি সাব ইন্সপেক্টর ও তিন কনস্টেবল প্রত্যাহার

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যদের দাবি তাদের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। অভিযোগগুলোর তদন্ত শেষ হলে তাদেরকে স-সম্মানে পূণরায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে বিশ্বাস তাদের।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||

সমালোচনা বিতর্ক আর জনবিরুদ্ধতার মুখে হবিগঞ্জের দুই ওসি, এক সাব-ইন্সপেক্ট, ৩ কনস্টেবলেকে প্রত্যাহার করতে হয়েছে। শাস্তি পাওয়া এসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মানুষবিরুদ্ধ বিভিন্ন অপরাধ ও অনৈতিক কাজের অভিযোগ রয়েছে।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি শেখ নাজমুল হক আজমিরীগঞ্জ থানায় থাকতে একটি মামলায় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় ১৫ই সেপ্টম্বের তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও চুনারুঘাটেও দায়িত্ব পালনের সময়ে ওসি নাজমুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের অভিযোগও রয়েছে ওসি নাজমুলের বিরুদ্ধে।

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে ওসি শেখ নাজমুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

এ দিকে শায়েস্তাগঞ্জে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ১৯শে সেপ্টেম্বর রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হোসেনসহ ৫ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ১৪ই সেপ্টেম্বর অলিপুর ‘আর এফ এল বেস্ট বাই’য়ের ম্যানেজার লুৎফুর রহমান তার এক গ্রাহকের মোটরসাইকেলে ওলিপুর আসছিলেন। এ সময় শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ মোটরসাইকেলটি আটক করে কাগজপত্র দেখতে চায়। কিন্তু চালক কাগজপত্র বাড়িতে রয়েছে জানালে ম্যানেজার লুৎফুর রহমানের জিম্মায় মোটরসাইকেলটি রেখে চালক বাড়ি থেকে কাগজপত্র আনতে যান। কিন্তু তিনি আর কাগজপত্র নিয়ে না আসায় পুলিশ লুৎফুর রহমানকে থানায় নিয়ে যায় পরে তাকে হাজতে আটকে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত জানিয়ে ২৮ হাজার টাকা দাবি করেন শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি মোজাম্মেল হোসেন।

অবশেষে ওসি মোজাম্মেল হোসেনের দাবি করা ২৮ হাজার টাকা দিয়ে রাতে থানা থেকে মুক্তি পান ম্যানেজার লুৎফুর রহমান। এ ঘটনায় গত ১৭ই সেপ্টেম্বর লুৎফুর রহমান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার তদন্ত শুরু করেন। এতে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওসি মোজাম্মেল হোসেন, এক সাব ইন্সপেক্টর ও ৩ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।

পুলিশকে জনগনের বন্ধু জানিয়ে এলাকার নাগরিক সমাজ বলছেন, জনগণের নিরাপত্তায় পুলিশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের কারণে পুলিশের প্রতি মানুষের অনাস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের শুধু প্রত্যাহার নয়, চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারেরও দাবি জানান তারা।

এদিকে, প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যদের দাবি তাদের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা এবং বানোয়াট। অভিযোগগুলোর তদন্ত শেষ হলে তাদেরকে স-সম্মানে পূণরায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে বিশ্বাস তাদের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন