প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে বৃদ্ধা মায়ের মানবেতর জীবনযাপন

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চাচীয়া মীরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারা বেওয়া (৬৩)। প্রায় ২০ বছর আগে তার দুই প্রতিবন্ধী ছেলে রেখে স্বামী আব্দুল করিম চলে যানা না ফেরার দেশে।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা ||

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চাচীয়া মীরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ারা বেওয়া (৬৩)। প্রায় ২০ বছর আগে তার দুই প্রতিবন্ধী ছেলে রেখে স্বামী আব্দুল করিম চলে যানা না ফেরার দেশে। এরপর থেকে চরম মানবেতর দিনাতিপাত করেছ ৩ সদস্যের পরিবারটি।

সোমবার বিকেলে স্থানীয়রা জানান, স্বামী আব্দুল করিম মারা যাওয়ার পর থেকে অন্যর বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে আসছে মনোয়ার বেওয়ার। এ দিয়ে কোনমতে চলে তিন জনের সংসার। তবে দুই ছেলে মোস্তফা (২৮) ও মোখলেছার (২৪)। এ দুজন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী হওয়ায় সব দায়িত্ব একাই সামলান মনোয়ারা বেগম। দুই ছেলের জন্য তিন বেলা ডাল-ভাত জোগাতেই বৃদ্ধা বয়সে অন্যর বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে হয় মনোয়ারা বেওয়াকে। তবুও অসহায় বৃদ্ধা মনোয়ারা বেওয়ার ভাগ্যে জোটেনি সরাকরের কোন ভাতার কার্ড। এমনকি প্রতিবন্ধী দুই সন্তানদের কপালেও জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা।

এছাড়া মনোয়ারা বেওয়ার শয়ন ঘরটিও জরাজীর্ণ। ঘরের চালায় অসংখ্য ছিদ্র। বর্ষা এলে চাল বেয়ে পানি পড়ে ঘরে। ঘরের বেড়া-টাটিও ভাঙাচোরা। একটা ছাতা আছে সেটাও পলিথিন আর বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বানানো। আর অসুখ হলে তো শুধু আল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই তার।

তিনি একটা বয়ষ্ক বা বিধবা ভাতা কার্ড পাওয়ার জন্য ঘুরেছেন অনেকের দ্বারে দ্বারে। জনপ্রতনিধি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করলেও মিলেনি ভাতা কার্ড।

অশ্রুভেজা নয়নে মনোয়ারা বেওয়া বলেন, আমার তো কপালে জুটলো না কোনো ভাতা। আর বাঁচবো কতদিন? তাই এখন আর নিজের কথা চিন্তা করি না। আমার মৃত্যুর পর সন্তানরা কিভাবে চলবে। যদি সরকারিভাবে তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা করতো, তাহলে হয়তো তারা দু’মুঠো ভাত খেয়ে বাঁচতে পারবে।

এ বিষয়ে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, চাহিদা অনুযায়ী ভাতা কার্ড বরাদ্দ কম। পরবর্তীতে মনোয়ারার বিষয়ে চেষ্টা করা হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন