|| সারাবেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ ||
প্রস্তাবে(?) রাজি না হওযায় ছেলে বউয়ের চুল কেটে দিয়েছেন শ্বশুর হবিবর রহমান। শুধু চুল কেটে দিয়েই ক্ষান্ত হননি হবিবর রহমান। কাচি দিয়ে মাথায় আঘাত করায় মারাত্মক আহত ছেলে বউ এখন সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের মহেশপুরে।
ছেলে বউ বলেন, “প্রায় ১০ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তারা।শাশুরি অসুস্থ হয়ে পড়ায় শ্বশুর গেল বেশ কিছুদিন ধরে আকার ইঙ্গিতে আমাকে বিরক্ত করতেন। মান সম্মানের কথা ভেবে এগুলোকে চেপে রাখতাম। অন্য কাউকেতো নয়ই, স্বামীকেও বলতাম না। কিন্তু গেল ১৩ই সেপ্টেম্বর রোববার রাতে আমার স্বামী ঘরে না থাকার সুযোগে তিনি ঘরে ঢুকে আমাকে ধর্ষন করার চেষ্টা করে। না পেরে কাচি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। পরে আমার চিৎকারে বাড়ির পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সে পালিয়ে যায় এবং বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য আমার শ্বশুর হবিবর রহমান, ভাসুর জামাল ও শাহাদত বাড়ি ঘর ভাংচুর করে এবং আমাকে বেদরক মারপিট করে এবং মাথার চুল কেটে দেয়।
এবিষয়ে ছেলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ভালোবেসে নিজের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করার কারণেই তার বাবা তার ওপর ক্ষুব্ধ। এ কারণে তাদের ওপর প্রায়ই নির্যাতন চালায় বাবাসহ পরিবারের অন্যরা।
এলাকাবাসী বলছেন, মেয়েটার বিয়ে হবার পর থেকেই তাকে শ্বশুর হবিবরসহ পরিবারেব লোকজন নানাভাবে অত্যাচার করতো। তার অত্যাচারে গ্রামের মানুষও অতিষ্ঠ। এর আগেও গ্রামে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে হবিবরের বিরুদ্ধে।
বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের ওপর শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে আসছে। যা গ্রামের লোকজন সবাই জানে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সালিশ হলেও তারা মানেনি। হঠাৎ ১৩ই সেপ্টেম্বর রাতে আমার মেয়ের জামাই না থাকার সুযোগে হবিবর আমার মেয়েকে ধর্ষন ও হত্যা চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ঘটনাটি নিয়ে উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, মেয়েটির শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাপ প্রয়োগ করে আসছিলো এবং বিভিন্ন সময় মেয়েটি ও তার স্বামী শফিকুল পরিবারের লোকজনের দ্বারা নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। এমনকি নিজের ছেলের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও দিয়েছিলেন হবিবর। এসব বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু হবিবর কোনো বিচার মানে না।
উল্লাপাড়া থানার ওসি দিপক কুমার দাস জানান, তারা ঘটনাটি জানতে পেরে অন্যতম অভিযুক্ত হবিবর রহমানকে গ্রেফতার করেছেন। তবে এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে সকল আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাকীদেরও আটকে অভিযান চালানো হবে।