|| আবদুল্লাহেল বাকি, ধামইরহাট, নওগাঁ থেকে ||
মাঠে ছিটিয়ে দেওয়া বিষ মেশানো গম, চাল ও সরিষা খেয়ে মারা গেছে দুইশ’র বেশী পাখি ও একশ’র বেশী কবুতর। এতে ক্ষুব্ধ ও শোকাহত এলাকার মানুষ। প্রকৃতিবিরুদ্ধ এই ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর ধামইরহাটে।
কবুতরপালক দিনেশ মাহাত জানান, উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের কোকিল মন্টু পাড়ার মাঠে কে বা কারা বিষ মেশানো গম, চাল ও সরিষা ছিটিয়ে দেয়। এই গম, চাল খেয়ে কবুতর, ঘুঘু, শালিক, গুদু–রকানি, বুলবুলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দুইশ’ বেশী পাখি ও পঞ্চাশটির বেশী কবুতর মারা যায়।
স্থানীয়দের ধারণা এলাকার আদিবাসী সিং সম্প্রদায় ও কিছু উঠতি বয়সের যুবকরা এভাবে পাখি শিকার করে খাওয়ার জন্য। আবার কেউ বিরোধবশত অন্যের ক্ষতি করতেই এমন কাজ করে থাকতে পারে।
এই ঘটনায় প্রকৃতিবিদ ধামইরহাট সরকারী এম এম কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিষ দিয়ে পাখি নিধন একটি গুরুত্বর অপরাধ যা বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থি। জীব বৈচিত্র ও প্রকৃতি সংরক্ষনে পাখিদের বিচরণ খুবই দরকার। পাখিদের কলতানে মুখরিত আমাদের আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যানেও আসেন অনেক পর্যটক। তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করেন।
রোববার ১৯শে এপ্রিল দুপুরে কোকিল মন্টু পাড়ার উত্তর মাঠে চাল ও গম ছিটানো দেখা যায়। ক্ষতির শিকার দিনেশ মাহাত’র ২৪ টি কবুতর মারা গেছে। আরেক ক্ষতির শিকার তোজাম্মেল অভিযোগের তীরটি ছুঁড়েছেন, এলাকার বেলালের ছেলে রবিউল, পাশ্ববর্তী স্বপন সিংহের ছেলে বৈদ্যসিং, প্রতিবেশী রবি সিং হিন্দু ও মুড়া পাড়ার কয়েকজনের প্রতি।
ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান আলী ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি, এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে তারা প্রকৃতির প্রেম বন্যপ্রাণি ও বিভিন্ন পাখি ধ্বংস করবে।’ এমন একটি প্রকৃতিবিরুদ্ধ কাজ মেনে নেওয়া যায় না বলেও তিনি হুঁশিয়ার করেন।
ধামইরহাট উপজেলা বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, স্থানীয়দের তথ্যমতে দুর্বৃত্তরা বহুদিন ধরেই নানাভাবে পাখি শিকার করে আসছিল। যা কখনই আমাদের কেউ জানায়নি। যখন কবুতর মরতে শুরু হলো তখন টনক নড়ে স্থানীয়দের। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#