|| সারাবেলা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট ||
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌরসভায় জয়বায়ু পরিবর্তন-২ প্রজেক্টের কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান ড্রেন নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজ ও পৌর মেয়রের আত্নীয়-স্বজনদের দিয়ে ঠিকাদারি কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টরা নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার ও কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে সতর্ক করে দেওয়ার পরও একই কাজ হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়ন অংশ হিসেবে পাঁচবিবি পৌরসভা ১ নং রেলগেইট হইতে পাঁচতলা বিল্ডিং (সদর রোডের দুই পার্শ্বে ১৭৫ মিটার) পর্যন্ত কভার স্লাবসহ আরসিসি ড্রেন পানি নিষ্কাশনের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এর অর্থায়নে নির্মাণের কাজ চলছে। ৯৯ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ড্রেনটি নির্মাণ করছে মেসার্স রায়হান কন্সট্রাক্টশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ আব্দুল মান্নান।
অভিযোগ উঠেছে, ড্রেন নির্মাণে পিকেট ইট দিয়ে ঢালাই করার কথা থাকলেও পুরাতন ড্রেনের বাতিল ইট ভেঙে খোয়া তৈরি করে ঢালাই কাজ করা হচ্ছে। এ কাজে পাঁচবিবি পৌর মেয়র তার আত্নীয়-স্বজনদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। পৌর ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ রফিক, ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাগরসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, পাঁচবিবি পৌরসভার ১ নং রেলস্টেশন রোডে যে ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে। তা অনিয়ম করে করা হচ্ছে। পুরাতন ড্রেনের ইট মেয়রের বাড়ির সামনে রেখে সেখান থেকে খোয়া করে নিয়ে ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। মেয়র তার আত্নীয়দের দিয়ে ঠিকাদারি নিয়ে নিজেই কার করছে। এভাবে ড্রেন নির্মাণ করলে বেশি টিকবে না। এই ড্রেন নিমার্ণে ভালো ভাবে নির্মাণ করা হোক।
ঠিকাদারের নাম জানতে চাইলে ড্রেন নির্মাণের মিস্ত্রি মাহবুব বলেন, এই কাজ মেয়র হাবিব করিচ্ছে। এই কথা বলেন ড্রেন নির্মাণের লেবার আবু সজল সহ আরো কয়েকজন।
পাঁচবিবি পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহিদুল ইসলামকে নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এরিয়ে গিয়ে বলেন, আমি মাস্টাররোলে চাকরি করি। তাই এ ব্যাপারে পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলুন। এদিকে পাঁচবিবি পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মারুফ আহসান বলেন, আমরা কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে খোয়ার কিছু ত্রুটি দেখেছি। আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করতে নিষেধ করেছি এবং তাদের সতর্ক করে দিয়েছি।
পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এই কমিটিতে আমাদেরকে রেখেছে শুধু পরামর্শের জন্য। পৌরসভার নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন আছে তারা কাজের মানের দেখাশোনা করেন। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করবো না।
মেসার্স রায়হান কন্সট্রাক্টশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ আব্দুল মান্নানের পক্ষে প্রতিনিধি মাহবুবুব আলম লেবু বলেন, এ ব্যাপারে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ হয়নি তবে রাস্তা দিয়ে গাড়ী যাওয়ার ফলে ডাস পড়েছে। ১ নম্বার ইট দিয়ে খোয়া করে কাজ করছি। ড্রেনে আসলে চলমান, ড্রেনে পানি থাকবে। আমরা ঠালাই পানি দেই না। দু’সাইটে ডাল বেঁধে দিয়ে পানি ছেচে দিয়ে পরের দিন পানি গেলে কোন সমস্যা নেই। পানির উপর ঠালাই নয়। তবে মূল টিকাদারের মোবাইল নেই, সাব টিকাদার হিসাবে কাজ করি।
নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে জয়বায়ু পরিবর্তন-২ প্রজেক্টের পিডি ও পাঁচবিবি পৌরসভার সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বলেন, ড্রেনটির প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ কাজ হয়েছে এবং ২৫ শতাংশ কাজের বিল দেওয়া হয়েছে। এই ড্রেন নির্মাণে পিকেট ইট দিয়ে ঢালাই কাজ করতে হবে। সেখানে ইঞ্জিনিয়রা মনিটরিং করছে। তবে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে এরকম তথ্য আমার কাছে নেই। আমি যদি তথ্য পাই তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঁচবিবি পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বলেন, পাঁচবিবি পৌরসভা ১ নং রেলগেইট হইতে পাঁচতলা বিল্ডিং পর্যন্ত যে ড্রেন নির্মাণের কাজ হচ্ছে তাতে অনেক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়টি সত্য একটুও নয়, সম্পূর্ণ ভিক্তিহীন। এ বিষয়ে আমাদের নিয়মিত টেস্ট আছে, পরিদর্শন আছে। সর্ব সময় লোকজন দেখা শুনা করছে। তবে বিষয়টি সঠিক নয়।