স্ত্রীর গায়ে আগুন দিলো পুলিশ কনস্টেবল

||অনলাইন প্রতিনিধি, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)||

জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার বাজারপাড়া ভাড়া বাসায় পুলিশ কনস্টেবল শোভন আহম্মেদ ব্র্যাক কর্মকর্তা স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (৪০) এর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এঘটনা ঘটে।

মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কনস্টেবল শোভন আহম্মেদকে (৩৬)গ্রেফতার করেছে দেওয়ানগঞ্জ থানা পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে প্রায় ১০ বছর আগে নেত্রকোনা সদরের সাতপাই এলাকার নবাব আলীর মেয়ে ইয়াসমিনের সঙ্গে ময়মনসিংহ সদর থানার কাউনিয়ার শোভন আহম্মেদের বিয়ে হয়। কনস্টেবল শোভন আহম্মেদ হিন্দু ছিলো। তার পূর্ব নাম প্রেমানন্দ ক্ষতরিয়। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। প্রেমানন্দ ধর্ম পরিবর্তন করে করে নিজের নাম রাখে শোভন আহম্মেদ।

ইয়াসমিনেরও পুর্বের স্বামী মারা গেছে, তারও এক সন্তান রয়েছে।
ধর্ম পরিবর্তননের বিবাহিত জীবন ভালোই চলছিলো। তাদের সংসারে কোন সন্তান নেই। ইয়াসমিনের ময়মনসিংহ শহরে ও নেত্রকোনায় ৪টি বাড়ী জমি ও দোকান রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ব্র্যাকের দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে দেওয়ানগঞ্জ বাহাদুরাবাদ শাখায় প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে রয়েছে। শোভন আহম্মেদ শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী থানায় কনস্টেবল হিসিবে রয়েছে।

ইয়াসমিনের স্বজনরা জানায়, ইয়াসমিনের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেয়ার জন্য বিভিন্ন অজুহাত করেছে এবং মাঝে মধ্যে ইয়াসমিনকে নিযার্তনও করেছে তার স্বামী।
শোভন আগের ঘরের স্ত্রী সন্তানদের টাকা দিতো। ওদিকে ইয়াসমিনও তার আগের সন্তানকে টাকা দিতো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো এবং ইয়াসমিনকে তার পিতার বাড়ী যেতে দিতো না। কয়েকদিন আগে ইয়াসমিন একমাত্র সন্তান ও তার বাবার সাথে নেত্রকোনায় দেখা করেছে।

মঙ্গলবার এনিয়েই রাতে কথা কাটাকাটির এক পযার্য়ে স্ত্রী ইয়াসমিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে গ্যাসের জলন্ত চুলায় ধাক্কা দেয়। ওই সময় ইয়াসমিন চিৎকার করে উঠলে বাড়ীর মালিকসহ পাশের বাড়ীর লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় ।শরীরের অধিকাংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করে।

বাড়ীর মালিক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানান,মধ্যরাতে চিৎকার শুনতে পাই , গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ।ভেতরে ধোয়া আর চিৎকার শোনা যায়। ওই সময় তার স্বামীর নাম ধরে চিৎকার করে ডাকলেও তার স্বামী দরজা বন্ধ রাখে। এক পযার্য়ে জোর করে দরজা খোলা হয়।

এ বিষয়ে শ্রীবর্দী থানার ওসি, রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, শ্রীবর্দী থানায় শোভন পূবের নাম কিন্তু প্রেমানন্দ নামে চাকরি করছে। মঙ্গলবার থেকে সে কর্মস্থলে অনুপস্থিত।

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি, এমএম ময়নুল ইসলাম বলেন- এব্যাপারে ইয়াসমিনের বড় বোন হাজরা বেগম বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেছেন। কনস্টেবল শোভন আহম্মেদকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত পুলিশ কনস্টেবলের সবোর্চ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন