বিধবা ভাতা কার্ড চাওয়ায় বৃদ্ধাকে মারলো চেয়ারম্যানের স্ত্রী

জামালপুরে বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দম্পত্তির বিরুদ্ধে এক বৃদ্ধ নারীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

।। সারাবেলা প্রতিনিধি, জামালপুর ।।

জামালপুরে বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দম্পত্তির বিরুদ্ধে এক বৃদ্ধ নারীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.রফিকুল ইসলাম আলমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার হনুফা বেওয়া নামের ওই নারীর বাড়ি শরিফপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামে। তার স্বামীর নাম আক্কাস আলী শেখ। দুই বছর আগে তার স্বামী মারা গেছে। নিজে কোন রকম অন্যের বাড়িতে কাজ করে চলেন। এ ঘটনায় ওই নারী ১১ আগষ্ট ২০২০ মঙ্গলবার আনুমানিক বিকেল পাঁচটার দিকে জামালপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , হনুফা বেওয়া সাত মাস আগে বিধবা কার্ডের জন্য শরিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.রফিকুল ইসলাম আলমের কাছে ৫ হাজার টাকা দেন।

কিন্তু চেয়ারম্যান টাকা নিয়েও কার্ড করে দেননি। কার্ডের জন্য চেয়ারম্যান বাড়িতে যাওয়ার অপরাধে মো.রফিকুল ইসলাম আলম ও তাঁর স্ত্রী ওই নারীকে মারধর করেন। ওই নারী স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

নির্যাতনের স্বীকার হনুফা বেওয়া জানান, চেয়ারম্যান কার্ডের জন্য ৫ হাজার টাকা চান। সুদে ৫ হাজার টাকা নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসি। এরপর ৭ মাসেও আর বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়নি। কার্ড চাইতে গেলেই চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রী আমাকে মারধর করেন। গরিব মানুষ। কার্ড না দিলে, আমার টাকা ফেরত দেক। ৫ হাজার টাকা আমাদের কাছে অনেক। এর বিচার চাই। বিচার চাইতে থানায় আসছি।

নির্যাতনের স্বীকার হনুফা বেওয়ার একমাত্র ছেলে আলিফ সেখ জানান, দুই বছর আগে আমার বাবা মারা গেছে। আমার মা এ বাড়ি সেই বাড়িতে কাজ করে কোন রকমে সংসার চালান। বিধবা ভাতার কার্ডের জন্য এক বছর আগে সুদে ৫হাজার টাকা নিয়ে চেয়ারম্যানরকে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সে আমার মা’র কার্ডটি দেয়নি। আজ মা কার্ডের জন্য তার বাড়িতে গেলে চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়। আমি আমার মাকে মারধরকারী চেয়ারম্যান আলমের বিচার চাই।

শরিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম আলম জানান, আমি বা আমার স্ত্রী এমন কোন ঘটনা ঘটায়নি। ওই বিধবা মহিলা আমার বাড়িতে গিয়ে তার কার্ডের কথা বললে, আমি তাকে বলি যে, বিধবা ভাতার কার্ডের তালিকাটা পরিষদে আছে। তালিকা দেখে বলতে পারবো আপনার নাম আছে কি না। তখন আমার স্ত্রী তাকে বুঝি বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সালেমুজ্জামান জানান, বৃদ্ধা নারীকে মারধরের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন