সারাবেলা প্রতিবেদন, খুলনা
করোনা ভা্ইরাসের প্রভাবে দেশের অন্য অঞ্চলের মতো বন্ধ রয়েছে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব নয়টি পাটকল। মিল বন্ধ থাকার সময়ে স্থায়ী শ্রমিকরা মজুরি-বেতন পেলেও মজুরি পান না অস্থায়ী প্রায় ১৯ হাজার শ্রমিক।
মিল বন্ধ থাকায় গত পাঁচদিনে চার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আগামী ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি থাকায় এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ জুটমিল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কায় সরকারি নির্দেশে গত ২৮শে এপ্রিল শনিবার থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি জুট মিল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
মিলগুলো হলো- ক্রিসেন্ট জুটমিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুটমিল, খালিশপুর জুটমিল, দৌলতপুর জুটমিল, স্টার জুটমিল, ইস্টার্ন জুটমিল, আলিম জুটমিল, জেজেআই ও কার্পেটিং জুটমিল।
নয়টি জুটমিলে প্রতিদিন প্রায় ১০০ টন পাটজাত পণ্য উৎপাদন হয়। যার মূল্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা। সে হিসাবে গত পাঁচদিনে এই মিলগুলোর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা।
বর্তমানে মিলগুলোতে প্রায় আট হাজার স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। মিল বন্ধ থাকলেও ছুটি শেষে এসব শ্রমিক মজুরি-বেতন পেলেও কোন অর্থ সহায়তাই পাবেন না এসব মিলের প্রায় ২০ হাজার বদলি বা অস্থায়ী শ্রমিক । এই পরিস্থিতিতে অস্থায়ী এসব শ্রমিকদের দু:শ্চিন্তার শেষ নেই।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের কার্যকরি আহ্বায়ক ও ক্রিসেন্ট জুটমিলের শ্রমিক সোহরাব হোসেন বলেন, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি জুটমিলে প্রায় ২০ হাজার অস্থায়ী (বদলি) শ্রমিক রয়েছেন। এরমধ্যে মাত্র একহাজার থেকে ১২শ শ্রমিক মিলগুলো বন্ধ হওয়ার সময় কর্মরত ছিলেন। এই স্বল্পসংখ্যক বদলি শ্রমিক মিল বন্ধ থাকার সময়ের মজুরির সুবিধা পাবেন। বাকি প্রায় ১৯ হাজার শ্রমিক কোনো মজুরি সুবিধা পাবেন না।
ক্রিসেন্ট জুটমিলের অস্থায়ী শ্রমিক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মিলগুলো আমাদের কোনো কাজে নিচ্ছে না। করোনা ভাইরাসের কারণে বাসার বাইরে গিয়ে অন্য কাজও করতে পারছি না। বর্তমানে ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব অভাব-অনটনে দিন কাটছে।
বিজেএমসি’র খুলনা অঞ্চলের সমন্বয়ক (লিয়াজোঁ অফিসার) বনিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কায় সারাদেশের সরকারি অফিস-আদালতের মতো খুলনা অঞ্চলের নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত জুটমিলও বন্ধ রয়েছে। এই জুটমিলগুলোতে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিও এখানে বেশি। তবে মিলগুলো বন্ধ থাকায় সেই ঝুঁকি এখন নেই।