মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক সাংবাদিক সুমন মাহমুদ আর নেই

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাংবাদিক সুমন মাহমুদ আর নেই। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি। গেল কয়েকদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে আসগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুমন মাহমুদ প্রত্যক্ষ অংশ নেন দেশকে স্বাধীন করবার সংগ্রামে। সেসময়ের ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খানের অন্যতম সহচর সুমন মাহমুদ স্বাধীনতা পরবর্তিতে জড়িয়ে পড়েন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের রাজনীতিতে।

বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দিনের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাবোধে ঋদ্ধ সুমন মাহমুদ সারাজীবন স্বপ্ন দেখেছেন একটি মানবিক রাষ্ট্রের। যে স্বপ্নের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করতে গিয়ে রোষানলেও পড়েন সরকারসংশ্লিষ্টদের। কারাবাসও কাটাতে হয় তাকে।

আগে থেকে পড়াশুনা আর সাংবাদিকতায় কিছুটা সম্পৃক্ততা থাকলেও নতুন ধারার কাগজ দৈনিক আজকের কাগজে থিতু হন পূর্ণ সাংবাদিকতায়। এরপর ভোরের কাগজে কাজ করেন। কিছুদিন কাজ করেছেন ন্যাশনাল টেলিভিশন এনটিভিতেও। নিখুঁত সংবাদ সম্পাদনা আর গুরত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশনে চৌকষ কলম ছিল তার। রাজনীতি, অর্থনীতিতো ছিলই, সঙ্গীতের মত বিষয়েও সম্যক ধারণা রাখতেন তিনি। সহকর্মীদের শেখাতে ও তাদের কাছ থেকে শিখতে কোন অহং ছিল না তার।

মুক্তিযুদ্ধ আকাঙ্ক্ষাজাত রাস্ট্রব্যবস্থা বেহাত হয়ে যাওয়ায় জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আক্ষেপ ও সংক্ষোভ ছিল মুক্তিযোদ্ধ সুমন মাহমুদের। মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ উঠলেই কিছুটা বলেই থেমে যেতেন তিনি। বলতেন, কী হবে এসব বলে। লিখতে বললেও সংক্ষোভে আওড়াতেন একই সংলাপ-কী হবে এসব লিখে।

সুমন মাহমুদের স্ত্রী দেশের নামকরা অনকোলজিষ্ট ডা. শাহীদা পারভীন । ছেলে ও ছেলে বউ দু’জনও পেশায় চিকিৎসক। তারাও করোনা আক্রান্ত। মেয়ে থাকেন জার্মানিতে। করোনা আক্রান্ত সুমন মাহমুদকে নিয়ে গেল কয়েকদিন রাজধানীর অনেক হাসপাতালেই গেছেন চিকিৎসা করাতে । শেষ পর্যন্ত ভর্তি করাতে পেরেছিলেন আসগার আলী হাসপাতালে । সেখান থেকেই চির বিদায় নিলেন আজীবন সদালাপি, সংক্ষুব্ধ, নিপাট এই মানুষটি।

পুনশ্চ: সংবাদ সারাবেলা পরিবারের পক্ষ মুক্তির সৈনিক সুমন মাহমুদের প্রতি স্যালুট! শোক ও সহমর্মিতা রইল পরিবারের প্রতি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন