|| অনলাইন প্রতিনিধি, মাদারীপুর ||
মাদারীপুরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় জেলার ৪টি পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ড ও ২২টি ইউনিয়ন রেডজোন ঘোষণা করা হলেও মানানো যাচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। বুধবার দুপুরে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব এলাকাকে রেডজোন হিসেবে ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা না মানলে জেল-জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে জেলার রেডজোনে লকডাউন শুরু হয়েছে। কিন্তু সরকারি আদেশ অমান্য করে অধিকাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে চলাচল করছে। সকালে বাজার করতে আসা ৫০ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। জনদূরত্ব মানার কোনো তোয়াক্কা করছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সদর উপজেলার পুরান বাজার, নতুন শহর, ইটেরপুল বাজারে এবং রাজৈর উপজেলার রাজৈর বাজার ও টেকেরহাটে রেডজোনে লকডাউন মানার কোনো বালাই নেই। কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের প্রয়োজনীয় দোকানের পাশাপাশি খোলা রয়েছে অন্যান্য জিনিসপত্রসহ গার্মেন্টসের দোকান-পাট। নির্ধারিত সময় বিকেল চারটার পরেও অনেক দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা গেছে। রেডজোনের কোনো প্রভাব নেই কোথাও। দোকান-পাট খোলা দেখে মনে হয় কেউ কিছুই জানে না।
জেলায় গেল এক সপ্তাহে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে অনেক। সংক্রমিতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রাজৈর উপজেলায়। সংক্রমণ রোধে প্রশাসন থেকে রেডজোন ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে লকডাউন। কিন্তু তা বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের দিক থেকে।
তবে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী লকডাউন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানাবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে কঠোরভাবে পুরোমাত্রায় লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারবো। আমাদের আশপাশের অনেক জেলা এখনও লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়নি। সব মিলে আজ প্রথমদিন লকডাউনে একটু ঢিলেঢালাভাব চলছে।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মানাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে ছোট-বড় যানবাহনের পাশাপাশি ইজিবাইক, সিএনজি চালিত গাড়ি, মাহিন্দ্র, ব্যাটারী চালিত রিকশা-ভ্যান মটরসাইকেল। সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। মাদারীপুরের সঙ্গে ঢাকাসহ দুরপাল্লার পরিবহন ও আন্ত:জেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও গণবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন। শিবচর পৌরসভার ১, ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন। কালকিনি পৌরসভার ১, ৪, ৫, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডসহ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন। রাজৈর পৌরসভার ১, ২, ৩, ৫, ৬ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডসহ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এসব এলাকায় নিত্যপণ্যের দোকান ও ব্যাংক ছাড়া অন্য সকল প্রকার দোকান-পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কথা। রেডজোন ও ইয়োলো জোনে যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার ঢিলেঢালাভাবে সব ছোট যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এক জোনে বসবাসকারীরা অন্য জোনে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু তদারকি না থাকায় আগের মতোই চলছে সবকিছু।