বেতন বাকি ১৩ মাস দ্রুত পাওনা চান প্যারাডাইস কেবলের শ্রমিকরা

|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||

লাগাতার পাঁচদিনের কর্মসূচিতেও বেতন মিলছে না নারায়ণগঞ্জের প্যারাডাইস কেবল কারখানার শ্রমিকদের। তাদের অভিযোগ, গেল ১৩ মাস ধরে তাদেরকে বেতন-মজুরি দিচ্ছে না মালিক-কর্তৃপক্ষ। করোনাদুর্যোগে যা কিছু সঞ্চয় ফুরিয়ে যাওয়ায় এখন তাদের না খাওয়া অবস্থা। তাই বাধ্য হয়েই এসেছেন রাজধানীতে নিজেদের দুর্ভোগের কথা জানাতে। চাইছেন নিজেদের পাওনা।

শ্রমভবনের সামনে লাগাতার কর্মসূচির পঞ্চমদিনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শ্রমিকরা প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশে শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, দেশে একটা মহামারী অবস্থা চলছে। প্রতিটি মানুষ সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে। এরইমধ্যে শ্রমিকরা টানা পাঁচদিন ধরে খেয়ে না খেয়ে শ্রম ভবনের বারান্দায় পড়ে আছে। অথচ সরকারের কারো কোন ধরনের উদ্বেগ নেই।

শ্রম দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ শিল্প পুলিশকে চিঠি দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেছেন। অন্যদিকে নির্দেশিত হওয়ার তিন দিনেও মালিকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। সংকটের সুরাহা করার বিষয়ে কারো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়।

তিনি বলেন, যেহেতু কোন কিছুতেই কারো কানে পানি যাচ্ছে না তাই প্রয়োজনে আগামী রোববার থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে শ্রমিকরা লাগাতার অবস্থানে বসবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্যারাডাইস কেবল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শ্রমিকনেতা দেলোয়ার হোসেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ, শ্রমিকনেতা জাহাঙ্গীর আলম গোলক, কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রুবেল, শ্রমিক নিলুফার ইয়াসমিন, আব্দুল কাইউম, ফয়সাল আহমেদ, মোহাম্মদ ডালিম প্রমুখ।

সমাবেশে শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ বলেন, সংকটের সুরাহায় সরকারি কোন সংস্থা এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অগ্রগতির কথা বলছে না। শ্রমিক পরিবারগুলো ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে আর কোন ভাবেই জীবন টেনে নিতে পারছেন না। এই মূহুর্তে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধে মালিকপক্ষকে বাধ্য করা না হলে তাদের জীবন বাঁচানো অসম্ভব হয়ে যাবে। শ্রমিকরা অসহায় এবং সর্বত্র প্রত্যাখ্যাত হয়ে শ্রম ভবনের বারান্দায় বসেছে। ১৩ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কারখানার উৎপাদন চালুর পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবে না।

বৃহস্পতিবারের অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানান, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি হাফিজ আদনান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ, অভিনয়শিল্পী সুমনা সোমা, শনির আখড়া আন্দোলনের নেতা মোসলে উদ্দিন মাসুদ, এম আই টিটো, যুবনেতা গোলাম রাব্বী খান প্রমুখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন