পত্রিকা বিক্রি বন্ধ কষ্টে আছে মাদারীপুরের হকাররা

|| অনলাইন প্রতিনিধি, মাদারীপুর ||

করোনাদুর্যোগে অন্য অনেক কিছুর মতই খবরের কাগজ বিক্রিও বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে মাদারীপুর সদর, শিবচর, রাজৈর ও কালকিনি উপজেলার ৫২ জন হকার প্রায় এক মাস ধরে পত্রিকা বিতরণ করতে পারছে না। যে পত্রিকা বিক্রি করে তাদের সংসার চলে সেই কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছেন তারা। তাদের আক্ষেপ, এখনো তারা পাননি কোন সরকারি সহায়তা।

মাদারীপুর সদর উপজেলায় ২০জন, কালকিনি উপজেলায় ১৮জন, শিবচর উপজেলায় ৯জন এবং রাজৈর উপজেলায় ৫জন হকার পত্রিকা পৌঁছে দেন পাঠকের কাছে। আর জেলায় এজেন্ট রয়েছে ৯জন। প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এ সব হকাররা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ব্যাংক, বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পত্রিকা পৌঁছে দেন। প্রায় এক মাস ধরে মাদারীপুর জেলার চারটি উপজেলায় পত্রিকা বিতরণ বন্ধ রয়েছে।

পরিস্থিতি তাদের ফেলেছে মহাসংকটে। সরকারি কোন ত্রাণও জোটেনি তাদের। ব্যক্তিগতভাবে দুই একজনে সামান্য যা কিছু দিয়েছে তাতেই কিছুটা সামাল দিতে পারছেন তারা। শুধু হকাররাই নন, পত্রিকা ব্যবসার সাথে জড়িত এজেন্টরাও দুর্গত অবস্থায়।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকালে যারা আমাদের কাছে পত্রিকা পৌঁছে দেয় অবশ্যই তারা ত্রাণ সামগ্রী পাওয়ার দাবিদার। আমার কাছে এখন কোন ত্রাণ সামগ্রী নেই। সরকারিভাবে ত্রাণ বা খাদ্যসামগ্রী পেলে তখন আমি হকারদের দেব।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সর্কেল) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন গিয়াসও একই কথা জানিয়ে বলেছেন, প্রথম দফায় যা বরাদ্দ ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। আবার বরাদ্দ আসলে হকাদের ত্রাণসহায়তা দেয়া হবে।

হকার শহীদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন পত্রিকা বিক্রি করে নগদ টাকা উপার্জন করি। সেই টাকাতেই চলে আমাদের সংসার। প্রায় এক মাস হয়ে গেল করোনাভাইরাসের কারণে আমরা পত্রিকা বিক্রি করতে পারছি না। আয়ের একমাত্র পথটিও বন্ধ। প্রতিদিন জজ, ডিসি, এসপি স্যারসহ বড় বড় সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে পত্রিকা পৌঁছে দেই। আর আজ এ বিপদের সময় কেউ আমাদের একবারের জন্যেও কোন খোঁজ নেয়নি।

হকার মাসুদুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক দিন হয়ে গেছে পত্রিকা সরবরাহ বন্ধ। এ অবস্থায় ছেলে মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। সরকার এত মানুষকে ত্রাণ দিলো, কই আমরাতো কেউ সরকারি ত্রাণ পাই না।

এজেন্ট ওমর আলী সিকদার বলেন, সরকারিভাবে আমাদের হকারদের কেউ কোন সহযোগিতা বা ত্রাণ দেয়নি। হকারদের সংসার চলেতো পত্রিকা বিক্রি করে। প্রায় এক মাস ধরে পত্রিকা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। হকাররা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।#

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন