|| সারাবেলা ডেস্ক ||
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রায় সব সূচকেই পরিস্থিতির উদ্বেগজনক অবস্থা এবং অধঃগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘‘রিপোটার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স’’ বা আরএসএফ এপ্রিলের শেষার্ধে প্রকাশিত ২০২০-এর রিপোর্টে দেখা গেছে, বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে ১৫১তম স্থানে- যা এর আগের বছর ছিল ১৫০তম স্থানে। ২০১৮ সালে ছিল ১৪৬তম স্থানে।
এমনি এক মুক্ত গণমাধ্যমবিরুদ্ধ পরিবেশে ‘ভয় বা পক্ষপাতহীন সাংবাদিকতা’ স্লোগান কন্ঠে নিয়ে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতই বাংলাদেশের সংবাদকর্মীরাও পালন করছে দিনটি। যদিও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ বছর দিবসটির সব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
১৯৯১ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ মোতাবেক ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩রা মে তারিখকে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ অথবা বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী সংবাদকর্মীরা এ দিনটি পালন করে আসছে।
সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন, স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার শপথ গ্রহণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবনদানকারী সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় এই দিবসটিতে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সক্রিয় এই সংস্থার হিসাব বলছে, করোনার মাঝেও বাংলাদেশে অন্তত ৮ জন সংবাদমাধ্যম কর্মীকে পুলিশসহ অন্যান্যরা আক্রমণ করে গুরুতর আহত করেছে। বিভিন্ন আইনে মামলা হয়েছে অন্তত ৭ জনের বিরুদ্ধে, আর ডিটেনশনে দেয়া হয়েছে ২ জনকে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কর্মরত অপর একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট বা সিপিজে বাংলাদেশের বিদ্যমান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।
একইভাবে উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন নিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ। তারা বলছে, গেল বছর কম করে হলেও ২০ হাজার ওয়েবসাইট ব্লক করা এবং অনলাইন মাধ্যমের ওপর বিধি-নিষেধ এবং নজরদারী বেড়েছে বাংলাদেশে।
দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা টিআইবি, বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রসহ অনেক সংস্থাই বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিম্নধারার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়েছে। এমনি প্রেক্ষাপটে আজ ৩রা মে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’।
এদিকে, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছেন প্রবীণ সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া সবল-সজীব ও দৃঢ়ভিত্তির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কোন দেশেই গড়ে উঠতে পারে না।#