ধর্ষণের প্রতিবাদে মহাসমাবেশ চলছে শাহবাগে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার জোরালো দাবি উঠেছে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও জনগণের এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে।

|| সারাবেলা প্রতিবেদন ||

ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ চলছে সারাদেশে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। শাহবাগের সীমিত প্রতিবাদ এখন রুপ নিয়েছে মহাসমাবেশে।

দেশজুড়ে সংঘটিত ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ এবং এসব পাশবিক নিপীড়ন বন্ধে সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তার’ অভিযোগ এনে এই মহাসমাবেশ ডেকেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর প্ল্যাটফর্ম ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’। একইসঙ্গে ধর্ষণ ও বিচারহীনতার প্রতিবাদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে এই মহাসমাবেশ থেকে।শুক্রবার বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে।

ধর্ষণবিরোধী গান, কবিতা ও স্লোগানে শুরু হয় মহাসমাবেশ। ঢাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকেও প্ল্যাকার্ডে লেখা দাবি নিয়ে মহাসমাবেশে যোগ দিয়েছেন অনেকেই।

সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশের মানুষ। শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন জানাচ্ছে তাদের ক্ষুব্ধ প্রকাশ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ। ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার জোরালো দাবি উঠেছে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও জনগণের এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে সমর্থন জানিয়েছেন। গত ৭ই অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এদের ছোটখাটো লঘুদণ্ড দিয়ে লাভ নেই। সর্বোচ্চ বিচারের যে দাবি উঠেছে, আমার মনে হয় এটা অযৌক্তিক নয়। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনকে আপসহীন মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আইনে ধর্ষণের সাজায় পরিবর্তন এনে তা মৃত্যুদণ্ড করা হচ্ছে। এ সম্পর্কিত একটি সংশোধিত আইনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে। আগামী সোমবার এই প্রস্তাব উত্থাপিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে সরকার। কেননা জনগণের পক্ষ থেকে এ দাবি উঠেছে। যেহেতু জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, সেহেতু এটি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। কারণ আইন মানুষের জন্য।

বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। এর পাশাপাশি দুই ক্ষেত্রেই অর্থ দণ্ডের বিধান আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন