|| উপজেলা প্রতিনিধি (শিবচর, মাদারীপুর) ||
ঢাকায় ফিরতে হবে। যোগ দিতে হবে কাজে। ঘরে বসে থাকলে খাওয়াবে কে? শুধু চাল আর ডাল দিয়েই তো সবকিছুর চাহিদা মেটে না। বেঁচে থাকতে হলে নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই দরকার। তার জন্য প্রয়োজন টাকা। কাজে যোগ দিতে না পারলে উপার্জনের পথও বন্ধ; আবার চাকরি হারানোরও আশংকা রয়েছে। ফলে করোনা ভাইরাসকে উপেক্ষা করেই ছুটতে হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়— এমনটাই বলছেন যাত্রীসাধারণ।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই যাত্রীসাধারনের সংখ্যা বাড়ছে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ফেরি ঘাটে। আন্ত:জেলা পরিবহন বন্ধ। তারপরও থ্রি হুইলারসহ ছোট গাড়িতে করে ঘাটে এসে নামছে দক্ষিনাঞ্চলের ঢাকামুখী মানুষ। লঞ্চ, স্পিডবোট বন্ধ থাকায় পদ্মা পার হবার একমাত্র বাহন ফেরিই এখন একমাত্র ভরসা তাদের ঢাকায় আসার।
মঙ্গলবার ৫ই মে সকাল থেকেই মাদারীপুর জেলার কাঁঠালবাড়ী ঘাটে বাড়তে থাকে ঢাকার দিকে আসা যাত্রীদের ভীড়। সারাদেশে ভারি যানবাহন বন্ধ থাকায় শুধু সাধারন যাত্রীরাই পার হচ্ছেন ফেরিতে।

বিআইডব্লিউটিসি’র কাঠালবাড়ি ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছেন, গত কয়েকদিন ধরেই ৪ থেকে ৫ টি ফেরিতে সীমিত আকারে যানবাহন পার করা হচ্ছে। এদিকে ঢাকার গার্মেন্টসগুলো খোলার কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্পভাবে ভেঙে ভেঙে ঘাটে আসছেন যাত্রীদের। লঞ্চ ও স্পিড বোট বন্ধ থাকায় ফেরিতেই নদী পার হচ্ছেন যাত্রীরা। অল্প হলেও ব্যক্তিগত গাড়ী, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরী সেবাদানকারী যানবাহনও পার হচ্ছে।
মুকসুদপুর থেকে আসা এক যাত্রী জানান,’ গার্মেন্টস খুলেছে। গিয়ে কাজে যোগ দিতে হবে। পরিচিত অনেকে কয়েকদিন আগেই চলে গেছে। কয়দিন আর বসে খাওয়া যাবে।’ করিমন আক্তারেরও একই কথা, ‘আমরা কাজ করে খাই। ঘরে বসে থাকলে তো শেষ পর্যন্ত ভাত জুটবে না। চাকরি চলে গেলে বড় বিপদে পড়তে হবে। তাই ঢাকা যাচ্ছি। গিয়ে কাজে যোগ দেবো।’



এদিকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনদূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হলেও সেটি মানার কোন সুযোগই নেই শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ফেরি ঘাটে। হাজার হাজার যাত্রী পদ্মা পার হচ্ছে। ফেরিতে গাদাগাদি করে নিজের জায়গা করে নিচ্ছে একটু দাঁড়িয়ে থাকার জন্য। সচেতনতার মধ্যে শুধু মুখে বাহারি রঙের মাস্কই দেখা যাচ্ছে!
বিআইডব্লিউটিসি’র কাঁঠালবাড়ি ঘাটের সহকারি ব্যবস্থাপক সামসুল আরেফিন জানান, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ১৭টি ফেরির মধ্যে ২টি রোরো, ২টি ডাম্ব, ২টি কে-টাইপ ও ১টি মিডিয়ামসহ মোটচ সাতটি ফেরি চলাচল করছে। সকাল থেকেই রাজধানীমুখী যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে।’#