|| সারাবেলা প্রতিবেদন, ঢাকা ||
গ্রেফতার ও কারাবন্দিত্বের পাঁচ মাসের মাথায় জামিন মিলেছে রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ভুঁইয়ার। রোববার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার দিদারুল ইসলামকে জামিন দেন হাইকোর্ট। গেল ৫ই মে র্যাব পরিচয়ে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় নিজ বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে তাঁর পরিবার। ৬ই মে দিদারুলকে রমনা থানায় হস্তান্তর এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সোমবার ১৪ই সেপ্টেম্বর দিদারের জামিন সম্পর্কিত আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিনের এই আদেশ দেন।
আদালতে দিদারুল ভূঁইয়ার জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, কাজী জাহেদ ইকবাল ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম পরে সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, সেশন ট্রাইব্যুনালে গত ৯ই আগস্ট দিদারুল ভূঁইয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিলে ২০শে আগস্ট তারা হাই কোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত জামিন মঞ্জুরের পাশাপাশি রুল জরি করেছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন গত ৭ই সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও ব্যবসায়ী মুশতাক আহমেদ এখনও জামিন পাননি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বিচারিক আদালত থেকেই জামিন দিয়ে দেয়। ফলে উচ্চ আদালত জামিন দেবে এটাই স্বাভাবিক। এই মামলার চার নম্বর আসামি মিনহাজ মান্নান ইমন বিচারিক আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ দিদারুল ভূঁইয়ার জামিনে আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন।”
কতদিনের জামিন দিয়েছে জানতে চাইলে এ আইন কর্মকর্তা বলেন, “নরমালি রুল জারি করে ছয় মাসের জামিন দেয়। দিদারুল ভূঁইয়ার ক্ষেত্রেও তাই হবে।”
এ জামিন আদেশর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে যাবে কিনা- সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বাপ্পী।
গত ৫ই মে সন্ধ্যায় দিদারুল ভূঁইয়াকে তার বাসা থেকে র্যাব পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় বলে পরিবারের অভিযোগ ছিল। যদিও র্যাব তখন তা স্বীকার করেনি। পরে ৬ই মে রাতে ৩৯ বছর বয়সী দিদারুলকে র্যাব রমনা থানায় দিয়ে যায় বলে পুলিশ জানায়।
তার সঙ্গে ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশে হস্তান্তর করে র্যাব। বিএলআই সিকিউরিটিজের কর্ণধার মিনহাজ মান্নানকে ৬ই মে বনানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৩ এর ডিএডি আবু বকর সিদ্দিকের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় তাদের দুজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও ব্যবসায়ী মুশতাক আহমেদকেও পরে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়। তারাই এ মামলার মূল আসামি।
জার্মানিতে থাকা ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, সুইডেনে থাকা সাংবাদিক তাসনিম খলিলও রয়েছেন এই মামলার ১১ আসামির মধ্যে। অন্য আসামিরা হলেন- জুলকারনাইন, আসিফ ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ, সাহেদ আলম ও ফিলিপ শুমাখার।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘ফেইসবুক ব্যবহার করে জাতির জনক, মুক্তিযুদ্ধ, করোনাভাইরাস মহামারী সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র/সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিপ্রায়ে অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি ছড়ানো, অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারার’ চেষ্টা করে আসছিলেন সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তরা।’