অনলাইন প্রতিনিধিঃ
বাচ্চা দুইটা খালি কান্নাকাটি করে, ঘরে চাল-ডাউল কিছুই নাই । তাতে ওদের কান্না কি সহ্য করা যায় ? এলাকায় নতুন আসছি ।কাউরে চিনি না । অনেকের কাছে গিয়েছি কিন্তু কেউ সহায়তা করে নাই। তাই কোনও উপায় না পাইয়া চুল বিক্রি করেছি ’এভাবেই বলছিলেন সাথী নামে এক মমতাময়ী মা।
সাভারের ব্যাংক কলোনী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে ছোট শিশু কুলে তুলে এক ঝাঁক কষ্টের কথা জানাচ্ছিলেন সাথী ।
এসময় সাথী জানান, তাদের দুই সন্তান আর স্বামী নিয়ে চার সদস্যের পরিবার ।ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় তাদের । টানা পোড়ার সংসারে উপার্জনের জন্য কিশোরগঞ্জ থেকে চার মাস আগে রাজধানীর মিরপুরে আসেন স্বপরিবারে । কিন্তু সেখানেও সংসারের সচ্ছলতা না ফেরায় আড়াই মাস পরে এসেছিলেন সাভারে ।
স্বামী সন্তান নিয়ে উপজেলার পৌর এলাকার ব্যাংককলোনী মহল্লায় নানু মিয়ার টিনসেড ভাড়া বাড়িতে শুরু করেছিলেন বসবাস। তার স্বামী মানিক বেছে নিয়েছিল দিনমজুরের কাজ আর সাথী বাসা-বাড়িতে।কয়েক দিনেই সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখে ওই দম্পতি। কিন্তু হঠাৎ দেশে করোনা উপস্থিতি। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের জনগণদের সাধারণ ছুটি দিয়ে বাসায় থাকতে বলা হয় ।
কর্মহীন হয়ে পড়ে সাথীর স্বামী মানিক । করোনার প্রভাবে বাসা-বাড়ির কাজ হারায় সাথীও।সংসারে অসচ্ছলতা ও খাবার সংকর্ট দেখা দেয় ।গেল দুইদিনে ঘরের শেষ মুষ্ঠি খাবারও শেষ হয়ে যায়। দুধের অভারে ১৮ মাসের ক্ষুধার্ত শিশুর কান্নায় ভেঙে পড়ে সাথী। প্রতিবেশীদের কাছে ত্রাণের খবর পেয়ে কয়েক জায়গায় গিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু তাকে কেউ চেনে না বলে কেউ সহযোগীতার করেনি ।
পরে সহায়তার খোঁজে সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে বেড়লে এক হকারের সাথে কথা হয় সাথীর। পরে সে জানতে পারে চুল বিক্রি করলে টাকা পাবেন । তাই মাথার চুল বিক্রি করে ১৮০ টাকা দিয়ে দু’কেজি চাল ও ক্ষুধার্ত ছেলের জন্য দুধ কিনেন ।এরপরে মঙ্গলবার রাতে খবর পেয়ে সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব ওই পরিবারের মধ্যে খাদ্যদ্রব্য ও ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেন।