কাদের বললেন আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশী জনপ্রিয় শেখ হাসিনা

“এদেশের কোটি কোটি মানুষ এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মী এ দিনে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছে। আপনিই এ দেশের এগিয়ে যাওয়ার অফুরন্ত প্রেরণা এবং সাহসের বর্ণিল ঠিকানা।”

|| নিজস্ব প্রতিবেদক, সংবাদ সারাবেলা ||

জন্মদিনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দলের চেয়ে বেশী জনপ্রিয় বললেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জানালেন, জীবন ও কর্মের মূল্যায়নে, তাঁর উদাহরণ কেবল তিনি নিজেই, কর্মের মধ্য দিয়ে এদেশে এখন ‘সবচেয়ে জনপ্রিয়’ ব্যক্তিও তিনি।

শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের আগে বক্তব্যে দলের শীর্ষ নেতা সম্পর্কে এমন মূল্যায়ন তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, “আজ আমাদের জাতীয় জীবনের এক স্মরণীয় দিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আমাদের আস্থার সোনালী দিগন্ত, প্রেরণার দীপ্যমান শিখা, আমাদের স্বপ্নময় অর্জনের কাণ্ডারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।”

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “পিতার পাঠশালায় রাজনীতির পাঠ নেওয়া কন্যা ইডেন কলেজের নির্বাচিত ভিপি হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সে ধারাবাহিক পথপরিক্রমায় আজ হয়ে উঠেছেন পিতার ছায়া, আদর্শিক উত্তরাধিকার, এদেশের কোটি মানুষের হুদয়ের স্পন্দন, মমতার আধার। এ অর্জিত আস্থার গহীনে নেই কোন কোনো ম্যাজিক। সূত্র বলি আর উৎস বলি, এ অর্জনের পেছনের রহস্য তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তার শৈশব থেকে আজ অবধি সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। কণ্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়ে পৌঁছেছেন আজকের অবস্থানে। দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অতন্দ্রপ্রহরী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ৭৩তম জন্মবার্ষিকীতে আপনাকে জানাই এদেশের গণমানুষের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, আপনার সাফল্য, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন।”

কাদের বললেন, “শেখ হাসিনা ভালোবাসেন দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি। তিনি অসহায়, দরিদ্র মানুষের ভালোবাসার ঠিকানা। উদার আকাশের মতো বিস্তৃত যার হৃদয়। তার শক্তি-তার সততা, পরিশ্রম, মানবিকতা আর পিতার মতো দেশের মানুষের প্রতি অপার ভালোবাসা। তাইতো তিনি আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব নেতাদের কাতারে, মর্যাদার আসনে। বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় তার দক্ষতা এবং দূরদর্শিতার প্রশংসা করে যাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়। সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক নেতৃত্বের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি। স্বীকৃতি পেয়েছেন ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’র। তার উদাহরণ তিনি নিজেই। এদেশে তার জনপ্রিয়তা এখন সবার শীর্ষে। তিনি দলের চেয়েও অধিক জনপ্রিয়।”

শেখ হাসিনাকে পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে এদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সফল ডিপ্লোম্যাট দাবি করে ওবায়দুল কাদের বললেন, ‍‍“গত ৪৫ বছরে এদেশের সবচেয়ে সৎ ও সাহসী রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক ও দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা। তিনি আছেন বলেই দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। তিনি আছেন বলেই বিনিময় হয়েছে যুগ যুগ ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল। তার হাত ধরেই বিক্ষুব্ধ পার্বত্যাঞ্চলে বইছে শান্তির সুবাতাস। তিনি আছেন বলেই আমরা জয় করেছি আরেক বাংলাদেশের সমান সুনীল সমুদ্রসীমা, দ্বার খুলেছেন সম্ভাবনাময় ব্লু ইকোনোমির। তিনি আছেন বলেই আমাদের স্বপ্নের ডানা আকাশ ছাড়িয়ে মহাকাশে পৌঁছেছে, আমরা প্রবেশ করেছি স্যাটেলাইট যুগে। তিনি আছেন বলেই পারমানবিক শক্তিধর দেশেগুলোর ক্লাবে নূতন সংযোজন বাংলাদেশ। তার সাহসী এবং দক্ষ নেতৃত্বে তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে বাংলাদেশ আজ নোঙর করেছে উন্নয়নশীল দেশের গর্বিত বন্দরে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের সোনালী ফসল নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু। এ সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে মহাসাগরের জলপ্রাচীর ভেদি সাবমেরিন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। তিনি জেগে আছেন বলেই নিশ্চিন্তে ঘুমায় বাংলাদেশ।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “শেখ হাসিনা এক আজন্ম উন্নয়ন-যোদ্ধার অপর নাম। হতাশ ও অসহায় প্রাণে যিনি সঞ্চার করেন জীবনের জয়গান। তিনি আমাদের সাহসের সোনালী দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছেন, বাড়িয়ে দিয়েছেন এগিয়ে যাবার আত্মবিশ্বাস। তাই তো আজ বিশ্বসভায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে মুজিবের সেই দুখিনী বাংলা। বাংলাদেশ আজ বিশ্বমানচিত্রে অর্জনের সোনালী দিগন্ত পানে অদম্য গতিতে ছুটে চলা এক ধাবমান অশ্ব “

তার প্রতিটি কাজ, সিদ্ধান্ত ও জীবনাচরণ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জন্য অনুসরণীয় বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “এদেশের কোটি কোটি মানুষ এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অগণিত নেতাকর্মী এ দিনে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছে। আপনিই এ দেশের এগিয়ে যাওয়ার অফুরন্ত প্রেরণা এবং সাহসের বর্ণিল ঠিকানা।”

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মতিন খসরু, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, আইন সম্পাদক নজিবুল্লা হীরু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, সাহাবউদ্দিন ফরাজী দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংবাদ সারাদিন