|| সারাবেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ ||
আবহাওয়া কড়া নাড়ছে শীতকালের। এই ঋতুকে বরন করে নিতে পিঠা ছাড়া বাঙালির ঐতিহ্য ভাবা যায় না। বলা যায়, শীত পরিপূর্ণই হয় না। শীতে পিঠা খাওয়ার রীতি বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির অংশ বিশেষ। যদিও এখনও শীত পুরোপুরি জেঁকে বসেনি জেলাজুড়ে । তারপরেও এরই মধ্যে জমে উঠেছে পিঠার আসর। জেলা শহরের অলিগলিতে মূলত ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, চাপটি পিঠা, ডিম চিতই ও তেল পিঠার আধিক্য দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়,করোনার মধ্যেও নারায়ণগঞ্জ শহরের পিঠা-প্রেমিকদের আকর্ষণ করার জন্য সরিষাসহ হরেক রকমের ভর্তার ব্যবস্থা করেছেন পিঠা বিক্রেতারা। এতে করে পিঠার দোকানগুলোতে পিঠা প্রেমিরা ঝুঁকছেন স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা মেনে।
শহরের চাষাড়া শহীদ মিনার, রাইফেল ক্লাব, নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়ক, গলাচিপা, আমলাপাড়াসহ বঙ্গবন্ধু সড়কের রাস্তার দু’পাশের পিঠার দোকানগুলোতে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে।
চাষাড়া নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এক পিঠা বিক্রেতা জানান, ‘সপ্তাহ দুয়েক আগ থেকে আমাদের পিঠা বিক্রি শুরু হয়েছে। এখনও ততোটা জমজমাট হয়নি পিঠার আসর। তাদের মতে, আরও কয়েকদিন পর বেশি শীত আসলে পিঠা বিক্রি বাড়বে। পিঠার দাম কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিঠার মূল্য অনেকটা আগের মতই রয়েছে। চিতুই পিঠা ৫ টাকা , ভাপা পিঠা ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করছেন। এছাড়া পিঠা-প্রেমিকদের আকর্ষণ করতে রয়েছে ডিম চিতুই, ধনে পাতার ভাপা পিঠাও।‘
রাইফেল ক্লাবের সামনে এক পিঠা বিক্রেতা বলেন, ‘শীতে সব জায়গাতেই ভাপা ও চিতই পিঠার আধিক্য দেখা যায়। ভাপা পিঠা মূলত সকাল ও সন্ধ্যায় বিক্রি হয়। বেলা বাড়লে এ পিঠা পাওয়া যায় না। তাছাড়া চিতুই পিঠার সাথে রয়েছে ৫-৬ ধরণের ভর্তাই মূলত ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। কেমন ক্রেতা পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শীত এখনও তেমন না আসলেও মূলত সন্ধ্যার পর ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি হয় বলে জানান তিনি।
পিঠা ক্রেতা রিপন মিয়া জানান, শীতকালতো এসেই পড়েছে। আর শীতকালে পিঠা না খেলে মনে হয় না শীত অনুভূত হচ্ছে। বিকেলের নাস্তার জন্য ভাপা পিঠা ও ডিম চিতুইয়ের সাথে শুটকি ও সরিষা ভর্তা ক্রয় করেছি । বছরের অন্যান্য সময় পিঠা পাওয়া গেলেও শীতকালের পিঠা খাওয়ার বিষয়টা অন্যরকম। তিনি বলেন, পরিবারের লোকজনের সাথে পিঠা খাওয়ার আনন্দই অন্যরকম ।
বছরজুড়ে শহরের অল্পসংখ্যক স্থানে পিঠা পাওয়া গেলেও জমিয়ে পিঠা খাওয়ার প্রকৃত সময় শীতকাল। তাই পিঠা খাওয়ার জন্য শীতের আগমনের সাথে সাথে হুমড়ি খেয়ে পরে নানা বয়সী পিঠা-প্রেমিকরা। পূর্ণাঙ্গ শীত আসলে জেলার বিভিন্ন স্থানে জমে উঠবে হরেকরকমের পিঠা মেলা।